‘সুযোগ-সুবিধা দিতে না পারায় স্যামসাংসহ অনেক বড় বিনিয়োগকারী ফিরে গেছে’

বিগত সরকার যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দিতে না পারায় স্যামসাংসহ অনেক বড় বিনিয়োগকারী ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চার দিনব্যাপী বিজনেস সামিটের প্রথম দিনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
কোরিয়ান ইপিজেড চেয়ারম্যানের কাছ থেকে শোনা এক ঘটনা তুলে ধরে চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ২০১২-১৩ সালের দিকে তিনি স্যামস্যাং কোম্পানির ২২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে এসেছিলেন। জমি সংক্রান্ত জটিলতা (মিউটেশন) সমাধানের জন্য স্যামসাং তৎকালীন ক্ষমতাসীন (আওয়ামী লীগ) দলের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে গিয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জমির কাগজপত্র ঠিক করে না দেওয়ায় বিনিয়োগ ভিয়েতনামের স্থানান্তর করে।
চৌধুরী আশিক আরও বলেন, এমন অনেক ঘটনা রয়েছে। অনেকেই বিনিয়োগ করতে এসেছিলেন কিন্তু উপযুক্ত পরিবেশ না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন। ইপিজেডের চেয়ারম্যান আলাপ প্রসঙ্গে তাকে বলেছিলেন, জমির কাগজপত্র ঠিক করে দিলে তিনি এখনও বিনিয়োগকারীদের নিয়ে আসতে পারবেন। এ কথা শোনার পর আশিক চৌধুরী বিডার কয়েকজন ও সংশ্লিষ্ট অন্য কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রজেক্ট অ্যাম্বাসেডর টিম নামে একটি টিম গঠন করেন। ওই টিম কাজ করে মাত্র দুই মাসের মধ্যে সেই সমস্যার সমাধান করে দেয়। জমি সংক্রান্ত জটিলতা কেটে যাওয়ায় নতুন করে বিনিয়োগের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সরকারের পক্ষ থেকে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য বন্ধে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সমস্যা দূর করতে কাজ করছি।
স্টার্টআপ বিষয়ে আলোচনার কথা উল্লেখ করে চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, আমরা স্টার্টআপদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছি। সবাইকে সহায়তা করতে চাই। তিনি বলেন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ডের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনার খরচ তুলনামূলক কম। পানির দাম, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জমির মূল্য সব মিলিয়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খরচ সমান হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাংলাদেশে খরচ কম।
তাছাড়া আমাদের কর্মীরা সহজেই নতুন কিছু শিখতে পারে। বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আগামী ১২ মাসের মধ্যে ধারাবাহিক যোগাযোগ রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত একদিনে হয় না। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমাদের লক্ষ্য তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা।