ছাত্রী ধর্ষণ : বশেমুরবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ছাত্রীকে দলগত ধর্ষণ ঘটনায় চতুর্থ দিনের মতো শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে। আজ রোববার সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে ঘোষণা করা হয়েছে দিনের কর্মসূচি। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে বেলা ১২টায় করা হয় বিক্ষোভ মিছিল।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী পিউ মৃধা কর্মসূচি ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বিক্ষোভ মিছিল, আলোচনার পাশাপাশি আজ বিকেল ৪টায় ধর্ষণবিরোধী নাটক উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সন্ধ্যা ৭টায় ‘আলোর মিছিল’ করা হবে।”
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—যেসব ধর্ষক গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করা, আন্দোলনকারী ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর বহিরাগতদের হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার, সিট না পেয়ে হলের বাইরে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শিক্ষার্থীদের দাবি তুলে ধরার সুযোগ করে দেওয়া।
শিক্ষার্থীরা জানান, একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের ভিত্তিতে তাঁরা ক্লাস এবং পরীক্ষার হলে ফিরতে চান।
গত বুধবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে বশেমুরবিপ্রবির ওই ছাত্রীকে দলগত ধর্ষণ করে স্থানীয় কয়েক যুবক। তিনি ও তাঁর বন্ধুর সঙ্গে সদর উপজেলার নবীনবাগের হেলিপ্যাডের সামনে থেকে হেঁটে আসছিলেন। পথিমধ্যে এক অটো রিকশা থেকে অন্তত সাত জন তাঁদের জোর করে তুলে নেয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজের নির্মাণাধীন ভবনে। সেখানে ওই ছাত্রীর সহপাঠীকে মারধর করে অপহরণকারীরা। পরে ছাত্রীকে দলগত ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় প্রক্টর রাজিউর রহমান বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। অন্যদিকে ধর্ষকদের গ্রেপ্তারসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আজ তার চতুর্থ দিন।
এদিকে, ধর্ষণের পরদিন বৃহস্পতিবার তিনজন ও পরে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন—হরতলীর সোনাকূড় গ্রামের পিয়াল (২২), সুইপার কলোনীর অন্তর (২২), জীবন (২৩) ও বনগ্রামের ফরিদ।
অন্যদিকে, র্যাবের হাতে আটক হয় মোট ছয় জন। সব মিলিয়ে ধর্ষণ ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা যায়।
গত শুক্রবার রাতে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে র্যাবের হাতে আটক ছয় জন হলেন—রাকিব মিয়া ওরফে ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪), নাহিদ রায়হান (২৪), মো. হেলাল (২৪) ও তূর্য মোহন্ত (২৬)। তাঁরা ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন বলে র্যাবের দবি।