জীবন ও কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছি : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষা শুধু জ্ঞান অর্জনের জন্যই নয়, জীবন গড়ার জন্যও। সেই জীবন গড়তে হলে সেখানে তার কর্মসংস্থানের বিষয়টিও তার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা প্রাক প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত যে শিক্ষা ব্যবস্থা করেছি, সেটি জীবনমুখী শিক্ষা ও কর্মমুখী উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রেও সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে এটি ব্যবস্থা নিয়েছি।
আজ রোববার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির এক সংসদ সদস্যর প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্য মিস ম্যানেজমেন্টের কথা বলেছেন, বিদেশ থেকে লোকজন এসে আমাদের অঞ্চলে এসে কাজ করছে, তাদের সাথে আমাদের গ্রাজুয়েটদের পার্থক্যটা কোথায়? তাদের সাথে আমাদের গ্রাজুয়েটদের একটা জায়গায় বড় তফাত রয়েছে, তা হলো আমরা যা শিখছি, সেখানে আমরা প্রয়োগ বেশি শিখি না। আর তার সাথে সফটস্কিল, কমিউনিটি স্কিল, প্রবলেম সলভ স্কিল এগুলো শিখানো হয় না। আমরা এখন মাধ্যমিকে যেমন করছি একইভাবে উচ্চশিক্ষা শিখানোর ক্ষেত্রে সফটস্কিলে জোড় দিচ্ছি। ইন্ড্রাস্টির কী প্রয়োজন? ইন্ড্রাস্ট্রির একাডেমিক কারিকুলামের মাধ্যমে, ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে ইন্টারর্নশিপ করানো এবং এরপরে তারা যেন কর্মজগৎ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে বের হতে পারে। সেখানে যেন যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারে সে জন্য এ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একই সাথে আমরা কারিগরি শিক্ষার ওপরে ব্যাপকভাবে জোড় দিচ্ছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের এনরোলমেন্টের হার ছিল শতকরা ১ ভাগের কম। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ২০২০ সালের আগে আমরা সেটা ২০ ভাগে উন্নীত করবো। তখন অনেকে অনেক রকমের মন্তব্য করেছিলেন, এটা অসম্ভব। কিন্তু আমরা বাড়িয়ে ১৭ ভাগের বেশিতে উন্নীত করতে পেরেছি। আমরা আমাদের কারিগরি শিক্ষার পুরো বিস্তার সারা দেশে ঘটিয়েছি। শুধু কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নয়, আমরা সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নবম ও দশম শ্রেণিতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা চাই দুটি করে ট্রেড চালু করতে, যাতে নবম দশম শ্রেণিতে যারা পরে তারা অন্তত একটি ট্রেড শিখে বের হতে পারবে এবং দশম শ্রেণির পরে কারও যদি পড়ার সুযোগ না হয়, তাহলে সেও দক্ষতার সাথে ট্রেড নিয়ে বের হবে, তখন তার কর্মসংস্থান হবে। যারা এরপরেও পড়তে হাতে কলমে শিক্ষার মাধ্যমে তাদের মধ্যে একটি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। আমরা পুরো শিক্ষার মধ্যে গুণগত মান উন্নয়নের জন্য প্রধানত কাজ করে চলেছি। এখন আমাদের টেকনিক্যাল ভোকেশনালে পাস করে কোয়ালিফিকেশনের ফ্রেম ওয়ার্ক অনুযায়ী যে স্তরে পাস করে বের হবে, বিদেশে গিয়েও সে স্তরে পাস করে বের হবে। একই সাথে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা ন্যাশনাল ফ্রেমওয়ার্ক, যেন বিশ্বের সাথে আমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারি, সেটার আমরা ব্যবস্থা করছি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সকল প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ইউজিসি ও অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল হয়েছে। সেটা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কোর্স অ্যাক্রিডিটেশন দিয়ে যেতে হবে। যেন সেটির মান আমরা রাখতে পারি ও উন্নীত করতে পারি। এই সমস্ত ব্যবস্থাগুলো করা হয়েছে, কারণ আমরা বিশ্বাস করি; এই ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা সঠিকপথে আগামীতে এই গ্রাজুয়েটদের কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা পাব। নতুন যে কারিকুলাম তৈরি হয়েছে, তা মুখস্থ কোনো বিদ্যা নয়, পড়ে পড়ে শিখতে হবে এবং তারা প্রয়োগ করতে শিখবে। তাই আমরা প্রাথমিক থেকে নিয়ে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত পুরো জায়গায় আমরা পরিবর্তন বা সংস্কারের কথা বলছি না, আমরা রূপান্তরের চেষ্টা করছি এবং সে চেষ্টা আমাদের অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে তার বিরাট কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।