‘শিওরক্যাশে’ ফি জমা দেওয়া নিয়ে ভোগান্তিতে জবি শিক্ষার্থীরা
অনলাইনে ভর্তি ও পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার একমাত্র মাধ্যম রূপালি ব্যাংকের শিওরক্যাশের এজেন্ট খুঁজে না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকার বাইরে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরেকটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেও তাদের বিল পেমেন্ট অপশনে নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম।
গ্রামাঞ্চলে বিকাশ, রকেট ও নগদ এজেন্ট সহজে পাওয়া গেলেও শিওরক্যাশ এজেন্ট না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া অনেক সময় শিওরক্যাশে পেমেন্ট দিতে গিয়ে নানা জটিলতার কথাও বলছেন অনেকে।
১০ আগস্ট থেকে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৯ জুনের মধ্যে অনলাইনে পরের সেমিস্টারের ভর্তি ও পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছে বিভিন্ন বিভাগ।
২০১৭ সালের শেষের দিকে ভর্তি ও পরীক্ষার ফিসহ সব ফি পরিশোধের জন্য রূপালী ব্যাংকের অনলাইন ব্যাংকিং সেবা শিওরক্যাশের মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বছরের ১ এপ্রিল ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস নগদের সঙ্গে বেতন ও পরীক্ষা ফিসহ যাবতীয় ফি জমা দেওয়ার বিষয়ে চুক্তি করে কর্তৃপক্ষ। তবে, এই সেবাটি এখনও চালু না হওয়ায় ফি দিতে শিওরক্যাশ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বিকল্প কোনো উপায় নেই।
দীর্ঘ ছুটি ও করোনাভাইরাসজনিত মহামারি পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী গ্রামে রয়েছেন। এরই মধ্যে বিভাগ থেকে ফি পরিশোধের নোটিশ দেওয়ায় অনলাইনে শিওরক্যাশের মাধ্যমে ভর্তি ও পরীক্ষা ফি দিতে হচ্ছে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন জীবন বলেন, ‘আমি মহামারির শুরু থেকে গ্রামের বাড়িতে আছি। অথচ সেমিস্টারের ভর্তি দিতে উপজেলা পর্যায়ের অনেক দোকানে ঘুরেও শিওরক্যাশ এজেন্ট পাইনি। ফলে আমার পেমেন্টটি করতে পারিনি।’
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রায়হান রতন বলেন, ‘আমি অনেক দোকানে গিয়েও পেমেন্ট করতে পারিনি। শেষে ঢাকায় এক বন্ধুকে বিকাশে টাকা পাঠিয়ে পেমেন্ট করেছি।’
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন বলেন, ‘শুনেছি নগদের মাধ্যমে বিল পে করতে পারব। কিন্তু, নগদের মাধ্যমে বিল পেমেন্টে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নামই নেই।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার বাসা কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে। এখানে বিকাশ আর রকেট ছাড়া অন্য কোনো সেবাই পাচ্ছি না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক ড. কাজী নাসির উদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে নগদের চুক্তি হয়ে গেছে। এখন আইটি দপ্তরের কিছু কাজ বাকি আছে, সেগুলো সম্পন্ন হলে নগদের মাধ্যমে বেতন, পরীক্ষার ফিসহ অন্যান্য পরিশোধযোগ্য ফি দেওয়া যাবে। এখন শিওরক্যাশের মাধ্যমে ফি নেওয়া হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের নেটওয়ার্ক অ্যান্ড আইটি দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য্য বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কাজ মোটামুটি সম্পন্ন। এখন নগদের কিছু কাজ বাকি আছে। তাদের কাজ শেষ হলে বলতে পারব কবে থেকে শিক্ষার্থীরা ফি দিতে পারবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘যদি কোথাও এজেন্ট খুঁজে না পাওয়া যায়, আামাদের বা বিভাগীয় চেয়ারম্যানকে জানালে আমরা অবশ্যই বিকল্প ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদকে ফোন দেওয়া হলে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তিনি ফোন কেটে দেন।