কারামুক্ত হয়ে পরীক্ষা দিলেন জবি শিক্ষার্থী খাদিজা
প্রায় ১৫ মাস পর মুক্তি পেয়ে সরাসরি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে পরীক্ষায় বসেছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা খাদিজা। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া পরীক্ষায় দেড় ঘন্টা পর সকাল ১১:৩০ টায় পরীক্ষায় বসেছেন খাদিজা।
আজ সোমবার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ‘স্ট্যাটিসটিক্যাল এপ্রোচেস টু দ্যা স্টাডি অব পলিটিক্স’ দিতে বসেন খাদিজা। এর আগে সকাল ৯ টায় মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন খাদিজা।
খাদিজার বোন সিরাজুম মনিরা বলেন, খাদিজার সেমিস্টার নষ্ট হয়েছে। সে ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হলেও এখন ১৬ তম ব্যাচের সাথে চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, খাদিজার গতকাল রাতেই মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও কারা কর্তৃপক্ষ কালকে মুক্তি দেয়নি। আজকে সকাল ৯ টায় মুক্তি দিয়েছে। মুক্তি পাওয়ার পর ক্যাম্পাসে আসতে আসতে সাড়ে ১১ টা বেজেছে।
পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে খাদিজাতুল কোবরা বলেন, ‘আমার এখনও মনে হচ্ছে আমি কারাগারেই আছি। এখানে এসে কোনোমতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। আগামী পরীক্ষাগুলোও দেবো। এখন আর কিছু বলতে চাইনা।’
এর আগে কাশিমপুর মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলসুপার মো. শাহজাহান মিয়া খাদিজার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খাদিজার জামিনের আদেশ গতকাল রোববার সন্ধ্যার দিকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই শেষে আজ ভোরে তাকে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, ভোরের দিকে খাদিজার পরিবারের কোনো স্বজন না আসায় তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছিলেন না। পরে তার বোন আসলে সকাল ৯টার দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
অনলাইনে সরকার বিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় আলাদা মামলা করে পুলিশ। একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম। অন্যটির বাদী কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন।
২০২২ সালের মে মাসে পুলিশ দুই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। সেই অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল খাদিজাতুল কুবরার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাতুল কুবরাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ। এরপর থেকে কারাগারে ছিলেন তিনি।
ওই মামলায় বিচারিক আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুরের পর তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। পরে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। এ জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। গত ১৬ নভেম্বর জবি শিক্ষার্থীর জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।