‘বাবা, তোরে বাঁচাইতে পারলাম না’
‘বাবা, তোরে বাঁচাইতে পারলাম না। শুধু ট্যাকার অভাবে আমার ছাওয়ালডার চিকিৎসা হইল না।’ কান্নায় ভেঙে পড়ে বুক চাপড়ে এভাবেই বিলাপ করছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্বাস আলীর বাবা আবদুল কুদ্দুস। মরণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হার মেনে না ফেরার দেশে চলে গেছেন আব্বাস আলী।
আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আব্বাস আলী।
রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শলুয়া গ্রামের কৃষক আবদুল কুদ্দুস ছেলের অকাল মৃত্যুতে বার বার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন। ছেলের লাশের দিকে তাকিয়ে তিনি বলতে থাকেন, ‘ছাওয়াল ডা বহুত কষ্ট কইরা পড়ালেহা করিচে। তার ইচ্ছা আছিল হে বেশি পড়ালেহা কইরা বড় চাকরি কইরবে। হামাদের অভাবী সংসারের হাল ধইরবে। কিন্তু অহন আমাগো সব আশা নিইব্যা গেছে।’
ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আব্বাস আলী। ইচ্ছা ছিল, মরণব্যাধি ক্যান্সারকে হার মানিয়ে মতিহারের সবুজ চত্বরে ফিরে আসবেন। কিন্তু সেটা আর হলো না। ক্যান্সারের কাছে হেরে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। পরে বিকেলেই লাশ চারঘাট উপজেলার শলুয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আজ সোমবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেলে গিয়ে দেখা যায়, আব্বাসের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তাঁর স্বজন ও সহপাঠীরা হাসপাতালে ছুটে এসেছেন। আব্বাসের বাবা আবদুল কুদ্দুসহ স্বজনদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে হাসপাতালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পরিবেশ। বন্ধুকে হারিয়ে শোকাহত আব্বাসের সহপাঠীরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। মেধাবী শিক্ষার্থী আব্বাসের মৃত্যুতে তাঁর বিভাগ ও পরিবারে নেমে এসেছে শোকের মাতম।
আব্বাসের অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান এবং আব্বাসের বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আজিজুল হক।