রাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় ‘উসকানি’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় ‘উসকানিমূলক’ প্রশ্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে এমন অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
ওই প্রশ্ন দুটির একটি হলো—‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থের নাম কী?’ এই প্রশ্নের চারটি অপশন হলো : ক. পবিত্র কুরআন শরীফ, খ. পবিত্র বাইবেল, গ. পবিত্র ইঞ্জিল, ঘ. গীতা।
অপর প্রশ্নটি হলো—'মুসলমান রোহিঙ্গাদের উপর মায়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা সশস্ত্র হামলা চালায় কত তারিখে?' যার চারটি অপশন ছিল : ক. ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, খ. ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, গ. ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ঘ. ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৫ অক্টোবর বিকেল আড়াইটা থেকে ৪টা পর্যন্ত চারুকলা অনুষদের অধীনে ‘আই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ৮০টি প্রশ্ন ছিল। এর মধ্যে দুটি প্রশ্ন নিয়ে আপত্তি তুলছেন অনেকেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি আবদুল মজিদ অন্তর বলেন, ‘এখানে শুধু একটি ধর্মবিশ্বাসকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা হয়নি, অপর ধর্মবিশ্বাসকেও ছোট করা হয়েছে। কিন্তু অন্য ধর্মকে ছোট করার অধিকার কারো নেই। এই রকম বিদ্বেষমূলক সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন করে চারুকলাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কি কলুষিত করা হচ্ছে না? এ ধরনের জঘন্য কাজের জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, ‘চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় যে দুটি প্রশ্ন করা হয়েছে, তা দিয়েই শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাম্প্রদায়িতার পরিপূর্ণ হিসাব করা যায়।’
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়টি (প্রশ্ন তৈরি) উচিত হয়নি। এটা অনিচ্ছাকৃতভাবে হয়ে গেছে। তাই এই দুটি প্রশ্নের নম্বর সব পরীক্ষার্থী পাবেন বলে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, ‘ধর্মীয় বিষয় নিয়ে এ ধরনের গোঁজামিলমূলক প্রশ্ন করা ঠিক হয়নি। প্রশ্নের এমন ধরন দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত।’