হাতের লেখায় মিল নেই, সাক্ষাৎকার পর্বে আটক ৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে উত্তীর্ণ হওয়া চার শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিয়েছে জাবি প্রশাসন। ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রের লেখার সাথে সাক্ষাৎকারের সময় হাতের লেখার মধ্যে মিল না থাকায় তাঁদের আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
আজ রোববার লিখিত পরীক্ষা পরবর্তী সাক্ষাৎকার দিতে এলে মাহবুব হোসেন,ইমাম হোসেন, অমিত হাসান ও আশিকুল হাসান রবিনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে রবিন ছাড়া বাকি তিনজন সাংবাদিকদের সামনে জালিয়াতির কথা স্বীকার করে। রবিন এ ঘটনাকে অস্বীকার করে জানায়, সে কোনো জালিয়াতি করেনি। ‘নার্ভাস’ থাকার কারণে ঠিক মতো লিখতে পারেনি বলে জানায়।
রবিনের ব্যাপারে জাবির প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘রবিনের হাতের লেখায় মিল না থাকায় তাঁকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মনে হয়েছে সেও অপরাধী। তাই তাঁকে আশুলিয়া থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ বাকি ব্যবস্থা নেবে।’ বাকি তিনজনের ব্যাপারে প্রক্টর বলেন, ‘তারা মুচলেকা দিয়ে ভর্তি জালিয়াতির কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।’
আটককৃতদের বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক নয়ন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী তাদের আটক করা হয়েছে। থানায় নিয়ে তাদের ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জাবির প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, মাহবুব হোসেন আদমদীঘি উপজেলার বাসিন্দা। সে সনদ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে সাড়ে তিন লাখ টাকার চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী মাহবুবের পরিবর্তে সনদ পরীক্ষা দিয়ে দেয়। মাহবুব ‘ই’ ইউনিটে (বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ) তৃতীয় স্থান লাভ করে। তাঁর ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর ৫৩০৯৪২। সে বগুড়া আর্মপুলিশ ব্যাটলিয়ান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে।
ইমাম হোসেন ময়মনসিংহ জেলার সদর থানার বাসিন্দা। তার পরীক্ষা ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে রাহাত নামের একজন দিয়ে দিলে সে ‘এফ’ ইউনিটে (আইন ও বিচার অনুষদ) তৃতীয় স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর ৬৩৭৩৪৪। সে ময়মনসিংহ আনন্দমহন কলেজের শিক্ষার্থী ছিল।
অমিত হাসান ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা। তার পরীক্ষাও ছয় লাখ টাকার বিনিময়ে সনেট নামের একজন দিয়ে দেয়। সে ‘এইচ’ ইউনিটে (আইআইটি) ১১তম স্থান লাভ করে। তার ভর্তি পরীক্ষার রোল নম্বর- ৮১২৬৮৬।
আশিকুল হাসান রবিন কুষ্টিয়া জেলার সদর থানার বাসিন্দা। সে ‘এফ’ (আইন ও বিচার অনুষদ) ইউনিটে ১৬তম স্থান লাভ করে।
জাবির ভর্তি পরীক্ষার সময় উত্তরপত্রে বাংলা ও ইংরেজিতে দুটি বাক্য লিখতে হয়। উত্তীর্ণ হওয়ার পর হাতের লেখা মিলিয়ে দেখার জন্য সাক্ষাৎকারের সময় শিক্ষার্থীদের আবার দুটি বাক্য লিখতে দেওয়া হয়। আটক চার শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের হাতের লেখার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের হাতের লেখার মিল না থাকায় সাক্ষাৎকার বোর্ডের সদস্যদের সন্দেহ হলে তাদের আটক করা হয়।