সকালে হলছাড়া করে দুপুরে ২২ কর্মীকে ফেরাল ছাত্রলীগ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিজ সংগঠনের কর্মীদের হলছাড়া করার পর আবারও তাদের ফিরিয়ে এনেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে দলের পক্ষ থেকে লালন শাহ হলে ফিরিয়ে আনা হয় ২২ শিক্ষার্থীকে।
জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল বুধবার ক্যাম্পাসের পাশে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ওই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিনের কর্মীরা। আন্দোলন শেষে গতকাল রাত ৯ টার দিকে সভাপতি গ্রুপের কর্মী সালাউদ্দিন আহমেদ সজল আন্দোলনকারীদের নিজ কক্ষে ডেকে নেন। এরপর কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন। একই সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
যাদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁদের মধ্যে ব্যবস্থাপনা বিভাগের কাজী বিল্লাল হোসেন ও আসানুল মোল্লাহ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আজ সকালে হল ছেড়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের কাছে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ভাস্কর্য মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিবের সামনে গিয়ে স্যালুট জানান। পরে তাঁরা ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে বিভিন্ন মেসে গিয়ে অবস্থান নেন।
হলছাড়া করার এই খবর বিভিন্ন গণমাধ্যেমে প্রকাশ হলে তোপের মুখে পড়েন সালাউদ্দিন আহমেদ সজল। তিনি বলেন,‘নিজেদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমটি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়গুলো নিয়ে সতর্ক থাকা হবে।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগকর্মী বলেছেন, ‘আমাদের বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে ও জোর করে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আমরা উপায় না পেয়ে চলে এসেছি।’
এর আগে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে দুই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ ২২ শিক্ষার্থীকে হল ছাড়া করা হয়। আজ সকাল ৯ টার দিকে লালন শাহ হল থেকে ওই শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী কাজী বিল্লাল বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করাই আমার দোষ। এ জন্য আমাকে হল ছেড়ে যেতে হচ্ছে।’
সেই সময় বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আহমেদ সজল বলেছিলেন, ‘আমাদের ইন্টারনাল ঝামেলার কারণে তাদের হল ছাড়া করা হয়েছে।’ কী ঝামেলা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সব কথা তো সবাইকে বলা যায় না।’
তবে সজল যার অনুসারী সেই শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহিনুর রহমান শাহিনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ছাত্রদের হল থেকে বেড় করে দেওয়া বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা। বিষয়টি উপাচার্যকে জানানো হয়েছে।’