কোটা আন্দোলনকারীদের সড়কে ফেলে মারধর
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের (রাবি) ওপর ফের হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় ছয় আন্দোলনকারী আহত হন। এদের মধ্যে তরিকুল ইসলাম তারেক নামের এক আন্দোলনকারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার বিকেল ৪টায় এই হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল ৪টায় আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাজশাহী- ঢাকা মহাসড়কে পতাকা মিছিল বের করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা, রড ও লোহার পাইপ দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাবি ছাত্রলীগের মারমুখী অবস্থানের কারণে আন্দোলনে দাঁড়াতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা ১১টায় পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা ছিল আন্দোলনকারীদের। ছাত্রলীগের মারমুখী এ অবস্থানের ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন নেতাকর্মী মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেন। পরে সোয়া ১০টার দিকে ৭০-৮০ জন নেতাকর্মী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন তাঁরা। এতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনস্থলে আসতে পারেননি।
এরপর বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আসেন এবং ক্যাম্পাসে কোনো রকম অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না করার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এ সময় প্রক্টর বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে বলে আমাকে জানিয়েছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
জানতে চাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ মোন্নাফ বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগ আমাদের আন্দোলনস্থলে আগে থেকেই অবস্থান নেওয়ার কারণে আমরা আন্দোলন শুরু করতে পারিনি।’
তবে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলম কিবরিয়া বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সব অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেই ছাত্রলীগ অবস্থান নিয়েছে।
এর আগে গতকাল রোববার অনির্দিষ্টকালের মতো ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় আন্দোলনকারীরা। একই সঙ্গে ওই দিন কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা মিছিল এবং বিক্ষোভ কর্মসূচির করার ঘোষণা দেওয়া হয়।