সাবেক সেনাপ্রধানের ফেসবুক প্রোফাইল ‘লাল’
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ-সংঘাতে নিহতদের স্মরণ করে এবং এসব ঘটনার বিচার চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই নিজের প্রোফাইলে লাল রঙের ফ্রেম ব্যবহার করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণার পরপরই গত সোমবার রাত থেকে ফেসবুক লালে লাল হয়ে যায়। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মী, লেখক, সাংবাদিক, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অনেক মানুষ নিজেদের ফেসবুক প্রোফাইলে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানান।
তবে সবার নজরকাড়ে সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়ার লাল প্রোফাইল। সাবেক এ সেনাপ্রধান শুধু নিজের প্রোফাইল পিকচারই লাল করেননি, কভার ফটোতে দিয়েছেন লাল রং। মুহূর্তের মধ্যে ইকবাল করিমের প্রোফাইল শেয়ার করেন অনেকে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টায় প্রোফাইল পিকচার ও কভার ফটোতে ৮১ হাজার মানুষ লাভ রিয়েক্টসহ পছন্দ করেছেন। মন্তব্য করেছেন তিন হাজার তিনশ জন। শেয়ার হয়েছে সাত হাজার ৯০০ বার।
ইকবাল করিম ভূঁয়ার এ লাল প্রোফাইলে মারুফ কামাল খান নামে একজন লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ। সময়োচিত।’ কারিমুল হাই নাঈম লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ আপনাকে। আশা করি আপনার সামর্থ্যের সম্পূর্ণ এ সময়ে আমরা দেখব।’নাজিম এ শুভ্র লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ স্যার সাধারণত মানুষের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য।’
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষ-সংঘাতে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে মঙ্গলবার (গতকাল) সারা দেশে শোক পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর রাতে কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক মুখ ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং তা অনলাইনে প্রচারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়ার জন্ম ১৯৫৭ সালের ২ জুন কুমিল্লায়। কুমিল্লা জিলা স্কুল এবং ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে তার পড়ালেখা। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন পান ইকবাল করিম ভূঁইয়া। নবম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়কের ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
২০১০ সালের মে মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হন। ২০১২ সালে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল মুবীনের কাছ থেকে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ইকবাল করিম ভূঁইয়া। ২০১৫ সালের ২৫ জুন সেনাপ্রধান হিসেবে অবসরে যান তিনি।