ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
দুদিন ধরে কোটা সংস্কারকারী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচার চেয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী’র ব্যানারে এক মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধনে আন্দোলনকারীরা ‘ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা দে নইলে পদ ছেড়ে দে’, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাস থেকে শিক্ষা বাঁচাও,’ ‘আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার বিচার চাই,’ ‘আন্দোলনের সাথে প্রহসন বন্ধ কর, যৌক্তিক সংস্কার কর,’ ইত্যাদি ফেস্টুন প্রদর্শন করে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার সংকট দেখা দিয়েছে। ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের উচিত তাদের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া।
গত দুদিন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে। তখন প্রশাসন চুপ ছিল। তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া অনিমেষ বলেন, প্রশাসন নৈতিকভাবে যে জায়গায় আছে সেখানে থেকে চুপ করে থাকা তাদের অধিকার নেই। তিনি বলেন, প্রক্টর বলেছেন, ‘কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেব।’ অথচ এদিকে গতকাল ছাত্রলীগের হামলার পর অনেকেই গুরুতর আহত হয়েছে। কাউকে গুম করা হয়েছে। কারা অভিযোগ করবে। এগুলো প্রশাসন দেখে না।
সালমান ফারসি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত ১০ বছরে ছাত্রলীগের কেউ আহত হয়নি। তারা অন্যদের মারধর করে আহত করছে। এতে তাদের কোনো বিচারও করে না প্রশাসন।
উম্মে হাবিবা বেনজির বলেন, গত দুদিন ক্যাম্পাস খুলতে না খুলতেই ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তিনি ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড আইয়ুব খানের এনএসএফকে (ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেডারেশন) ছাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
উম্মে হাবিবা প্রক্টরের বক্তব্য উল্লেখ করে বলেন, প্রক্টর গত শনিবারের ঘটনায় বলেছেন, ক্যাম্পাস ছুটি ছিল। তিনি কিছু জানতেন না। তাঁর কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অথচ প্রক্টরের দায়িত্ব ক্যাম্পাসে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ক্যাম্পাস ছুটি কি না এ কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। তিনি দায়িত্ব পালন করতে না পারলে পদত্যাগ করুন।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হয়ে, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, মধুর ক্যান্টিন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ ঘুরে প্রক্টর অফিসে যায়। সেখানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা।