ক্ষমা চাইতে অর্থমন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলেন শিক্ষকরা

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা এবং ঘোষিত অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অর্থমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন তাঁর প্রতিবাদে এ সময় বেঁধে দেয় তারা।
আজ বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ফেডারেশনের মহাসচিব ও সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতির মাধ্যমে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী গতকাল সংবাদ মাধ্যমে শিক্ষকদের বিষয়ে বলেছেন, শিক্ষকদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। এ ছাড়া তিনি শিক্ষকদের সম্পর্কে আরো কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন- যা শুধু অনভিপ্রেতই নয় অসংলগ্নও বটে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে অন্যদের ক্ষেত্রেও অযাচিত, বিরূপ ও হাস্যকর মন্তব্য করে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। অতীতে তিনি স্বৈরাচার সরকারের মন্ত্রী ছিলেন এবং এখনো তাঁর স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিবর্তন হয়নি বিধায় তিনি এ রকম ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন। শিক্ষকদের সম্পর্কে তাঁর এহেন মন্তব্য বাংলাদেশের শিক্ষা পরিবারের প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি সদস্যের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। এমতাবস্থায় আমরা অর্থমন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্য ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানাই। অন্যথায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতির দায়ভার তাঁকেই বহন করতে হবে।
শিক্ষকরা বলেন, সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা ও মর্যাদাগত বৈষম্যের বিষয়টি নিরসনের প্রক্রিয়া শুরু করবে এবং তাঁদের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা করে অনতিবিলম্বে ইপ্সিত সব দাবি-দাওয়া পূরণ করবে। অন্যথায় আমরা শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণে লাগাতার কর্মবিরতিসহ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
সপ্তম বেতন কাঠামোতে সচিবদের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেকশন গ্রেড অধ্যাপকদের অবস্থান ছিল সর্বোচ্চ গ্রেড ১-এ। শুধু মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্য সচিব গ্রেড-১ এ থাকলেও একটি অতিরিক্ত ভাতা পেতেন। কিন্তু সদ্য ঘোষিত অষ্টম বেতন স্কেলে গ্রেড ১-এর ওপর আরো দুটি বিশেষ ধাপ থাকায় এবং সিলেকশন গ্রেড বাতিল করায় অধ্যাপকরা আর কোনোদিনই গ্রেড ১ প্রাপ্ত হবেন না। প্রকারান্তরে শিক্ষকদের চার ধাপ অবনমন করা হয়েছে।
বিবৃতিতে শিক্ষকরা বলেন, ‘ঘোষিত বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চার দফা দাবির কোনোটিই গ্রহণ করা হয়নি, এমনকি দাবি পূরণের বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়নি। আমরা অনতিবিলম্বে এ দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষার দাবি জানাচ্ছি।’