ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ
আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর অধিভুক্ত কলেজগুলোর সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে কাল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ করার কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আগামীকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস উইং থেকেও একই তথ্য জানানো হয়েছে। তারা বলেছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আগামীকাল সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম।
এ ঘটনায় পুরো ঢাকা উত্তাল। টানা চতুর্থদিনের মতো আজ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সড়কগুলোর মোড়ে মোড়ে বাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলগুলো থামায় শিক্ষার্থীরা। চালকের কাছে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে চায়। লাইসেন্স থাকলে গাড়ি ছাড়ে, নয়তো আটকে রাখে, নতুবা পুলিশের কাছে দিয়ে দেয়। উল্টো পথে আসা গাড়িগুলোও তারা ফিরিয়ে দেয়।
কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কের যে স্থানে শহীদ রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই ছাত্রছাত্রী নিহত হয়েছিল আজ বুধবার বিকেলে সে স্থান থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে ‘সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ছাত্র আন্দোলন’। তারা আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলগুলোতে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের ডাক দেয়।
সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমের সামনে সাত দফা দাবির কথা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো-১. বেপরোয়া ড্রাইভারকে অবিলম্বে ফাঁসি দিতে হবে ও ড্রাইভারদের সঙ্গে মালিক পক্ষকেও দুর্ঘটনার দায়ভার নিতে হবে; ২. এই শাস্তি অবিলম্বে সংবিধানে সংযোজন করতে হবে, সব ফিটনেসবিহীন গাড়ির রুট পারমিট অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; ৩. সড়কের প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে, সিসি ক্যামেরার সুষ্ঠু তদারকি করতে হবে; ৪. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের সামনে স্পিডব্রেকার ও জেব্রা ক্রসিং রাখতে হবে; ৫. বিআরটিএর অধীনে সব চালক ও হেলপারকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লাইসেন্স প্রদান করতে হবে, বিআরটিএকে সেনাবাহিনীর আওতাভুক্ত করতে হবে; ৬. শুধু ঢাকা নয় সারা দেশেই শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং ৭. সর্বোচ্চ হাঁটার জন্য উপযুক্ত ফুটপাথ চাই।
কমিটির তৌফিকুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের আগামী কালকের যে কর্মসূচি, আমরা সব স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে সুষ্ঠুভাবে কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়া মানববন্ধন করব। শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন হবে। কোনো ধরনের গাড়ি ভাঙচুর করব না আমরা। যত দিন পর্যন্ত আমাদের এই সাত দফা দাবি আদায় না হচ্ছে আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে ইনশা আল্লাহ।’