বিছানায় শুয়ে-বসে পরীক্ষা দিলেন রাবির তরিকুল
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলায় আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলামকে বিছানায় শুয়ে-বসে থেকে মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে বসে পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন করেছিলেন তরিকুল। চিকিৎসা কেন্দ্রের অনুমতিও পেয়েছিলেন। কিন্তু অনুমতি মেলেনি উপাচার্য আবদুস সোবহানের। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিভাগের সভাপতির কার্যালয়ে একটি বিছানায় শুয়ে-বসে পরীক্ষা দিলেন তরিকুল।
তরিকুলের সহপাঠীরা জানান, গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়ে তরিকুল শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা করান। এ সময় তরিকুল চিকিৎসাকেন্দ্রের বিছানায় বসে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। তরিকুলের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে তাঁকে অনুমতি দেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অনুমতি চাইলে উপাচার্য আবেদনটি গ্রহণ করেননি।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অনুমতি না মেলায় বিভাগে এসেই পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে তরিকুলকে। তবে তরিকুলের জন্য বিভাগীয় সভাপতির কার্যালয়ে বিছানার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে তরিকুল শুয়ে-বসে পরীক্ষা দেন।
এ বিষয়ে তরিকুল বলেন, ‘আমি এখনো পুরোপুরি সুস্থ নই। আমাকে ক্র্যাচে ভর দিয়ে হাঁটতে হয়। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতে পারি না। এ অবস্থায় বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দেওয়ার মতো অবস্থা নাই। তাই মেডিকেলে বসে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি চেয়েছিলাম। আজকে পরীক্ষা দিতে আমার খুব কষ্ট হয়েছে এবং এভাবে পরীক্ষা দেওয়া আমার জন্য খুবই কষ্টকর।’
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মু. রফিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘তরিকুলের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। সে মেডিকেলে পরীক্ষা দিতে চেয়েছিল। এজন্য আমিও সুপারিশ করেছিলাম। অনুমতি না মেলায় আমরা বিভাগেই তার জন্য পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক বাবুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ছোঁয়াচে রোগের ক্ষেত্রে মেডিকেলে বসে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হয়। তরিকুল ছোঁয়াচে রোগী না হওয়ায় অনুমতি পায়নি।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
গত ২ জুলাই পুলিশের উপস্থিতিতে কোটা আন্দোলনকারীদের পতাকা মিছিলে হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতুড়িপেটায় তরিকুলের পা ভেঙে যায়। কিন্তু হামলার প্রায় তিন মাস পর এখনো পুরোপুরি সেরে ওঠেননি তিনি।