তাঁদের ঈদ কাটবে ক্যাম্পাসে
টিএসসি, মধুর ক্যান্টিন কিংবা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনের প্রাণোচ্ছ্ল আড্ডা নেই। হাকিম চত্বর, পলাশী মোড় কিংবা আইবিএর সামনের জটলাও চোখে পড়ে না। সুনসান নীরবতা সবখানে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৭ সেপ্টেম্বর ছুটি ঘোষণা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর পর থেকে ক্যাম্পাসের চিত্র এমনটাই। শিক্ষার্থীরা নাড়ির টানে বাড়ি চলে গেছেন অনেক আগেই। ব্যতিক্রম শুধু কয়েকজন। সামনে পরীক্ষা, ব্যক্তিগত সমস্যা কিংবা নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার ইচ্ছার কারণে ঈদেও হলে থাকছেন তাঁরা। ছাত্রদের প্রতি হলে এমন ৩০-৪০ জনের দেখা মিলবে। পরিবার-পরিজন ছাড়া তাঁদের ঈদ কেমন কাটে?
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ঈদের নামাজ শেষে কেউ আত্মীয়স্বজনের বাসায়, কেউ সিনেমা হলে ছবি দেখতে, আবার কেউ কেউ বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে বের হন। কেউ কেউ নিজ কক্ষে বসে ইন্টারনেটে সময় পার করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা এসব শিক্ষার্থীর জন্য আয়োজন থাকে হল কর্তৃপক্ষের। ঈদুল ফিতরে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য থাকে লাচ্ছা সেমাই কিংবা দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা। ঈদুল আজহায় তাঁদের জন্য হলে কোরবানির মাংস দেওয়া হয় দুপুরে।
হলে ঈদ করার অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী আরাফাত রহমান বলেন, ‘বিগত চারটি ঈদ ক্যাম্পাসে কাটিয়েছি। ঈদের সময় গাড়ির টিকেটের ঝামেলা, রাস্তাঘাটে যানজট লেগে থাকা এবং দীর্ঘদিন শহুরে পরিবেশে থাকার কারণে গ্রামের পরিবেশ ভালো লাগে না। তাই এখন বাড়িতে ঈদ করলেও আগের মতো আনন্দ পাওয়া যায় না।’
কথা হয় বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী মহিবুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় হলে অবস্থান করলেও দিনগুলো মন্দ কাটে না। আমরা বেশ কয়েকজন বন্ধু একবার থেকেছি। ঈদের নামাজ পড়ে সবাইকে নিয়ে যানজটমুক্ত চিরচেনা এ নগরীতে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা।’
কবি জসীমউদ্দীন হলের শিক্ষার্থী শুভ্র আবির বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা প্রায় শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু কখনো ঈদের সময় হলে অবস্থান করিনি। জীবনে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এবার হলে ঈদ করব।’
সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের শিক্ষার্থী হুসাইন বলেন, ‘ঈদের এ মুহূর্তে ঢাকা শহর থাকে কোলাহলমুক্ত। পড়ালেখার ব্যস্ততার কারণে এ শহরকে ভালোভাবে ঘুরে দেখার সুযোগ হয় না। ঈদ উপলক্ষে এটাই সবচেয়ে দারুণ সুযোগ।’