প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ঢাবি সাদা দলের নিন্দা
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন সম্পর্কে প্রধানন্ত্রীর বক্তব্যে বিস্ময়, লজ্জা ও হতাশা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সাদা দল। শিক্ষকরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এমন অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যে গোটা শিক্ষক সমাজ অপমানিত ও মর্মাহত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তাঁরা।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আমিনুর রহমান মজুমদার ও অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শিক্ষকদের দাবি এবং আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক এবং ন্যায়সঙ্গত। চার মাসেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাঁদের স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করেই আন্দোলন করে আসছেন। শিক্ষকদের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হওয়ার মতো কোনো তৎপরতাই ছিল না। আমরা আশা করেছিলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে চলমান সংকট সমাধানের ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু তা না করে গত ৪ অক্টোবর তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে শুধু শিক্ষক সমাজই নয়, আমাদের বিশ্বাস গোটা জাতিই মর্মাহত ও আশাহত হয়েছে।
আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যে কত শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেল তা শিক্ষকদের নিকট মুখ্য বিবেচ্য বিষয় নয়, বরং শিক্ষক সমাজ তাদের সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপারে সচেতন এবং তা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। শিক্ষকগণ তাঁদের ওপর অর্পিত একাডেমিক দায়িত্ব পালন সম্পর্কেও সচেতন। তবে এর এজন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারেরও বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। আমরা মনে করি শিক্ষকদের মর্যাদাহানি, উপেক্ষা এবং তাঁদের কটাক্ষ ও হেয় করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা এবং উচ্চশিক্ষায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন সম্ভব হবে না।
তাই চলমান সংকট সমাধানের লক্ষে শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল প্রবর্তনের জন্য অনতিবিলম্বে একটি বেতন কমিশন গঠন এবং পৃথক বেতন কাঠামো প্রবর্তন না হওয়া পর্যন্ত অষ্টম বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণ করে শিক্ষকদের প্রত্যাশিত পদমর্যাদাগত অবস্থান সুনিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গ্রেড অবনমন এবং তাঁদের মর্যাদাহানির প্রতিবাদে এবং স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা আন্দোলন করে আসছেন। ওই আন্দোলন নিয়ে গত ৪ অক্টোবর গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।