জাবি প্রক্টরের বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের নিন্দা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থীকে মারধর ও গুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। একই সঙ্গে দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে এ ধরনের দায়িত্বহীন কথাবার্তা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের সভাপতি তন্ময় ধর ও সাধারণ সম্পাদক দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তাঁরা এ দাবি জানান। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক অলিউর রহমান সান গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান।
লিখিত বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বলেন, ‘আমরা পত্রিকা ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি যে গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান চলাকালে মীর মশাররফ হোসেন হলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও দুই রাউন্ড গুলি করে কতিপয় ছাত্রলীগকর্মী। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহার সঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার কথোপকথনের অডিও ক্লিপের কথাবার্তা আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জেনেছি। অডিও ক্লিপটি আমাদের হাতেও এসেছে।’
অডিও ক্লিপটি থেকে যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে তা হলো, শুধু দাওয়াত না দেওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তাঁর নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন থেকে শুধু বিরতই থাকেননি বরং প্রক্টরের দায়িত্বে থেকে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেওয়ার মতো কথাও বলেছেন। আমরা মনে করি মারধরের ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ স্পষ্টতই উসকানিমূলক বক্তব্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের মতো একজন দায়িত্ববান লোকের কাছ থেকে এ ধরনের মন্তব্য কখনোই কাম্য নয়।’
বিবৃতিদাতারা বলেন, যে প্রক্টর ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্বে নিয়োজিত, সেই প্রক্টর যখন এই ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেন তখন আসলে ক্যাম্পাসের সামগ্রিক কী অবস্থা তার একটা চিত্র পাওয়া যায়। প্রক্টর তাঁর দায়িত্ব পালন না করে নিজে আরো ঝামেলা পাকাচ্ছেন। প্রক্টরের এমন বক্তব্য শুধু দায়িত্বহীনতার পরিচয়ই নয়, বরং অশিক্ষকসুলভও। দাওয়াত না পেয়ে যদি প্রক্টর এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে পারেন, তবে বুঝতে হবে তিনি নৈতিক অবস্থানে নেই।
প্রক্টরের এ ধরনের অশিক্ষকসুলভ, দায়িত্বহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্যের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। একই সঙ্গে মারধর ও গুলির ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও ফাঁকা গুলি ছোড়ার এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার রাতে এনটিভি অনলাইনে ‘গুলি করলেন ছাত্রলীগকর্মী, প্রক্টরের অডিও ফাঁস’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে ক্যাম্পাসে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।