আইনের আদর্শ উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এসআইইউ
সিলেট শহরে বাগবাড়ী শামীমাবাদ এলাকায় ২০০১ সালে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এই ইউনিভার্সিটিই সিলেট বিভাগের সর্ব প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন অনুষদের পাশাপাশি আইন অনুষদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করছে। প্রতিবছরই এই প্রতিষ্ঠান থেকে কৃতিত্বে সঙ্গে আইন পরীক্ষায় পাস করে আইন পেশায় নিযুক্ত হচ্ছেন শত শত শিক্ষার্থী।
দক্ষ ও সচেতন নাগরিক গড়ে তোলার লক্ষ্যে সিলেটভিত্তিক একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অলাভজনক, মানবতাবাদী সংস্থা ‘গুলশান ফাউন্ডেশন ফর এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন আহমদ ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ।
বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবা ও সন্ধ্যাকালীন দুটি প্রোগ্রাম চালু আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন অনুষদসহ চারটি অনুষদ রয়েছে। অন্যান্য অনুষদের চেয়ে আইন অনুষদটি সুনামের সঙ্গে প্রতিবছর ভালো ফলাফল অর্জন করছে। এই ইউনির্ভাসিটির আইন অনুষদের অনেক শিক্ষার্থী এখান থেকে আইন শাখায় পাস করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনি পেশায় আছেন। এ ছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে আইন পেশায় কাজ করছেন।
আইন অনুষদে বর্তমানে দিবা শাখায় স্নাতক (সম্মান) বিভাগে ১২০০ জন ও সন্ধ্যাকালীন গ্রোগ্রামে ৩০০ জন শিক্ষার্থী আছেন। আইন অনুষদে নিয়মিত পাঠদান করেন ১৭ জন শিক্ষক, অনিয়মিতভাবে পাঠদান করেন আরো ১৪ জন শিক্ষক।
অনিয়মিত শিক্ষক হিসেবে সিলেটের জেলা জজ (জননিরাপত্তা), জেলা জজ (দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল), সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, এসএমপির (সিলেট মেট্রোপলিটন) পুলিশ কমিশনার এই ইউনিভার্সিটিতে পাঠদান দেন।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইউনিভার্সিটির মোট অনুষদ চারটি, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৬০০০, শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা ৪৫টি, পূর্ণকালীন শিক্ষক রয়েছেন ৯০ জন ও খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন ৪০ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে প্রায় ৪০ হাজার বই আছে। গবেষণাগার আছে ছয়টি। মেধাবী ও আর্থিক সমস্যাগ্রস্ত ছাত্রছাত্রীদের ২০ থেকে শতভাগ পর্যন্ত টিউশন ফি ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য শতভাগ টিউশন ফি মওকুকের সুবিধা আছে। এসএসসি ও এইচএসসির মোট জিপিএ ৯ হলে ছাত্রদের টিউশন ফির ৫০ ভাগ ও ছাত্রীদের ৬০ ভাগ টিউশন ফি মওকুফ করা হয়। ভাইবোন একসঙ্গে ভর্তি হলে একজনের টিউশন ফি অর্ধেক মওকুফ করা হয়।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এ কে এম আবদুল আহাদ বলেন, ‘সিলেটে তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল তার মধ্যে আমি সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। ভর্তি হওয়ার পরে ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের আন্তরিক পাঠদানের ফলে চার বছর ক্লাস শেষ করে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় প্রথমবারই সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে যাই। শুধু আমি একা নই, সুনামগঞ্জ কোর্টে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অনেক ছাত্র রয়েছেন যাঁরা প্রথমবারই বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী সিলেট আইনজীবী সমিতির সদস্য ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বর্তমান শিক্ষক সারোয়ার আহমদ বলেন, ‘সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগ চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউনিভার্সিটির শিক্ষার মান ভালো থাকায় সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকে প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছেন এবং চার বছর সাফল্যের সঙ্গে অনার্স শেষ করে আইন পেশায় নিয়োজিত হয়েছেন।’
সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগ থেকে সদ্য পাঠদান শেষকারী শিক্ষার্থী সোনিয়া তালুকদার বলেন,‘ আমাদের এই ইউভিার্সিটির শিক্ষার মান খুবই ভালো, শিক্ষকরা খুব যত্ন করে ক্লাস নিয়েছেন। এবং যারা একটু পিছিয়ে থাকত তাদের বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আর যে উদ্দেশ্যে এই ভার্সিতে ভর্তি হয়েছিলাম, চার বছর সফলভাবে শেষ করেছি। আমার আশা এখন বার কাউন্সিল পরীক্ষায় ভালোভাবে উত্তীর্ণ হতে পারব।’
ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের প্রধান মো. হুমায়ূন কবির বলেন, ‘সিলেট বিভাগের চার জেলায় কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগ না থাকায় এই ভার্সিটির আইন বিভাগে শিক্ষার্থীরা বেশি ভর্তি হচ্ছেন। গত ১৫ বছরে এই ভার্সিটির ভালো ফল করায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আস্থা অর্জন করায় অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের এই ভার্সিটিতে ভর্তি করাচ্ছেন। শিক্ষার্থীরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই ভার্সিটিতে ভর্তি হন, আমরা চেষ্টা করি তাঁদেরকে সুষ্ঠু পড়ালেখা ও ভালা মানের শিক্ষা প্রদান করতে। সিলেট বিভাগের চার জেলায় এই ভার্সিটি থেকে উত্তীর্ণ হওয়া অনেক আইনজীবী বর্তমানে সুনাম নিয়ে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার দাস বলেন, ‘সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র সবগুলো ডিপার্টমেন্টই অত্যন্ত ভালো। আমরা চেষ্টা করি সবগুলো ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল অর্জন করুক। তাই ভালো মানের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীদের আমরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। তাদের প্রচেষ্টায় ভার্সিটি দিন দিন ভালো করছে। তার মধ্যে আইন বিভাগ বেশি ভালো করছে। আমরা দেখছি প্রতিবছরই আমাদের ছাত্ররা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দেশের বিভিন্ন কোর্টে আইন পেশায় প্র্যাকটিস করছেন।’