চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানে রুমীর স্বর্ণজয়

ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতেন, দেশের হয়ে কিছু করার। কিন্তু কীভাবে বড় হতে হবে, তা জানা ছিল না। কলেজের সেলিম স্যার পথ দেখান, বড় হতে হলে কী করতে হবে। ছোটবেলা থেকে পরিশ্রম ও মেধা তাঁকে আস্তে আস্তে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে। আর বড় বোন স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। তাতে কী! ছোট বোন রুবিনা জাহান রুমীকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে থাকেন। তাই অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এসএসসিতে এ-গ্রেড এবং এইচএসসিতে এ-প্লাস পাওয়ার পর ছোট বোনকে ভর্তি করান ঢাকার একটি কোচিং সেন্টারে। অনেক পরিশ্রমের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন সাইকোলজি বিভাগে।
অবশেষে সুযোগ হলো দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠে পড়ার। অনার্স শেষে মাস্টার্সে ভর্তি হন চিকিৎসা ও মনোবিজ্ঞান বিভাগে। ফোর ক্রেডিটের মধ্যে ডিপার্টমেন্টে সর্বোচ্চ ৩ পয়েন্ট ৮৪ পেয়ে ২০১৩ সালে বেগম আজিজুন নেসা মেমোরিয়াল স্বর্ণপদক জয়লাভ করেন তিনি। ১৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে তিনি এ পদক গ্রহণ করেন। বলছিলাম ঝালকাঠি জেলার মেধাবী ছাত্রী রুবিনা জাহান রুমীর কথা। ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া থানার কাঁঠালিয়ে গ্রামাঞ্চল থেকে উঠে আসা অদম্য মেধাবী এই শিক্ষার্থী স্বর্ণপদক অর্জন করে আরো উৎসাহ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, দেশের মানুষের জন্য কিছু করার। তাই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল করার পাশাপাশি কাজ করছেন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। সেগুলোর মধ্যে আত্মহত্যা বিষয়ে মানুষকে কাউসেলিং করছেন দীর্ঘদিন ধরে। আত্মহত্যা প্রতিরোধে ‘কানপেতে রই’ নামে একটি সংগঠনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে মানুষকে সেবা দিয়ে চলেছেন। ওয়ার্কশপ ও কাউসেলিং করছেন দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে।
এনটিভি অনলাইনে বলেছেন নিজের বেড়ে ওঠা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানে স্বর্ণপদক পাওয়ার পর রুমী জানান, এই অর্জন ভাষায় প্রকাশ যাবে না। আর এ অর্জনে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন শিক্ষক আর বড় বোন ইমরোজ জাহানকে।
পাঠ্যবইয়ের বাইরে রুমীর পছন্দ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এবং জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশনের বই।
এ ছাড়া ছাত্ররাজনীতি নিয়ে রুমী মনে করেন, ছাত্ররাজনীতিকে ভালোভাবে ব্যবহার করলে দেশের আরো বেশি উন্নতি ঘটবে। ভবিষ্যতে তিনি দেশে আত্মহত্যা প্রতিরোধে কাজ করতে চান। বাংলাদেশ নিয়ে প্রত্যাশা কী? এনটিভি অনলাইনের এমন প্রশ্নের উত্তরে মেধাবী রুমী বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে তিনি অনেক আশাবাদী। এ দেশের মানুষ সবকিছু করতে পারে। আগামী পাঁচ বছর পর এ দেশ অনেক উঁচুতে পৌঁছাবে।