রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে
রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলবে।
জানা গেছে, এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৯ জন এবং ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন ও ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন বিধি মোতাবেক নির্বাচনের প্রচারণা গত রোববার রাত ৮টায় শেষ হয়েছে।
ইসি বলছে, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনে ২০১৭ সালের নির্বাচনে ভোটার ছিল তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। এবার নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৪৭৬ জন। বর্তমানে সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার চার লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন। ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটারের মধ্যে তৃতীয় লিঙ্গের একজন রয়েছেন।’
রংপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও যুগ্ম সচিব আবদুল বাতেন বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। রোববার রাতে প্রচারণা শেষ হয়েছে। কোনো প্রার্থীই যাতে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে না পারেন সেজন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ দল কাজ করছে।’
ইসি জানিয়েছে, নির্বাচনে ৩৩টি ওয়ার্ডের ২২৯টি কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা এক হাজার ৩৪৯টি। নির্বাচনে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ২২৯ জন এবং সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন এক হাজার ৩৪৯ জন। মোট পোলিং অফিসার থাকবেন দুই হাজার ৬৯৮ জন।
জানা গেছে, রসিক নির্বাচনে মোট ভোটার চার লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জনের মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ এবং নারী দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন।
এদিকে রসিক নির্বাচনে ৮৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা। গতকাল সোমবার তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে নির্বাচন করতে হবে। প্রার্থীদের আচরণ হতে হবে বিধিমালা অনুযায়ী। আমাদের লোকবল খুব বেশি নেই, তবুও আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য চেষ্টা করব। রসিক নির্বাচনে আমরা ৮৬টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছি। সেসব কেন্দ্রের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গাইবান্ধার মতো কোনো সমস্যা দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমরা সুষ্ঠু ভোট চাই।’
এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন—আওয়ামী লীগের হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় পার্টির মো. মোস্তাফিজার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আমিরুজ্জামান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আবু রায়হান, খেলাফত মজলিশের মো. তৌহিদুর রহমান মণ্ডল, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের মো. শফিয়ার রহমান, জাকের পার্টির মো. খোরশেদ আলম এবং স্বতন্ত্র মো. লতিফুর রহমান ও মো. মেহেদি হাসান (বনি)।
সর্বশেষ এই সিটিতে ভোট হয় ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা হয় ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। যেহেতু কোনো সিটির মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর, তাই এ সিটিতে নির্বাচিতদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী, কোনো সিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হয়। এক্ষেত্রে এই সিটি নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে গত ১৯ আগস্ট। আর রসিক সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারির থেকে আগের ১৮০ দিনের মধ্যে। ২০৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত রংপুর সিটি আয়তনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি করপোরেশন।