ছোট্ট টিয়া ও মিষ্টি লিলি
ছোট্ট একটি গ্রামে লিলি নামে মিষ্টি মেয়ে বাস করত। তার উজ্জ্বল হাসিতে সবাই মুগ্ধ থাকত। তার বাবা জেমস ছিলেন পশু চিকিৎসক। বাবা-মেয়ের মিষ্টিমধুর সম্পর্ক গ্রামজুড়ে প্রশংসিত ছিল। প্রায়ই তারা একসাথে দীর্ঘপথ হাঁটাহাঁটি করত।
এক বিকেলে লিলি যখন তার বাবার সাথে গ্রামের সরু পথে হাঁটছিল। হঠাৎ তারা সবুজ টিয়াপাখির সুরেলা কিচিরমিচির শুনতে পেল। লিলি ও তার বাবা পাখির গান শুনে মুগ্ধ হলো। তারা তার উড়ে বেড়ানো দেখছিল।
কিন্তু মুহূর্তেই ঘটে গেল বেদনাদায়ক ঘটনা। টিয়াপাখি উড়তে উড়তে হঠাৎ করেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। তার মিষ্টি গান থেমে গেল।
লিলির মন কেঁদে উঠল। তার চোখ অশ্রুতে ভরে গেল। তার বাবা লিলির বেদনার কারণ বুঝতে পারল।
যখন তারা টিয়ার অকাল মৃত্যুতে বেদনাতুর, তখন তারা কাছাকাছি একটি ছোট ঝি ঝি পোকাকে দেখতে পেল। ঘাসের মধ্যে তার বাসা ছিল। সেও স্থির এবং নিথর হয়ে পড়েছিল। লিলি ও তার বাবা বুঝতে পারল, ঝি ঝিও মারা গেছে।
লিলি হাঁটু গেড়ে বসে ছোট্ট ঝি ঝি পোকাকে তুলে নিল। ক্ষুদ্রতম প্রাণীকে ভালোবাসতে দেখে তার বাবা খুশি হলেন।
লিলির তার বাবার দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে রইল। সেখানে অনেক প্রশ্ন ছিল। জেমস তার প্রশ্ন বুঝতে পারলেন। জেমস পাখি ও ঝি ঝি পোকাকে ভালো করে দেখলেন। বুঝলেন—অক্সিজেনের অভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে। মেয়েকে সেটি বললেন। এও বললেন, অতিরিক্ত গাছ কাটা ও বিভিন্ন কারখানার ধোয়ার কারণে এমনটি হয়েছে।
তারা টিয়া ও ঝি ঝি পোকার সমাধি তৈরি করলেন। সেখানে ফুল গাছ লাগিয়ে দিলেন। আশপাশে আরও দুটি গাছ রোপন করলেন, যেন প্রাণিরা অক্সিজেন পায়।
তাদের এই ভালোবাসা গ্রামের সবার কাছে অনুকরণীয় হয়ে রইল। এরপর সবাই একটি গাছ কাটলে দুটি করে গাছ লাগাতে শুরু করল।