করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে
চীনে করোনাভাইরাসের প্রভাবে পড়তে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতিতে। চীনে সব ধরনের শিল্প উৎপাদন বন্ধ থাকায় এরইমধ্যে দেশের বাজারে ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম এরইমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে। আমদানীকারকরা বলছেন, তাঁদের কাছে আমদানি পণ্যের স্টক ফুরিয়ে এলেও চীন থেকে নতুন করে পণ্য আনতে পারছেন না। এমনকি এসব পণ্য আমদানির জন্য চীনের বিকল্প কোনো দেশও খুঁজে না পাওয়ায় দেশের ইলেক্ট্রনিকসের বাজার সমস্যার মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চীন থেকে আমদানি হয় না এমন পণ্য দেশের বাজারে কমই আছে। বাংলাদেশ সারাবিশ্ব থেকে যে পরিমাণ পন্য আমদানি করে তার প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসে চীন থেকে। গত অর্থবছর চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। তাই চীনের ওপর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির নির্ভরশীলতার হারটাও অনেকখানি। বিশেষ করে, ইলেকট্রনিক পণ্যের প্রায় ৯০ ভাগই নির্ভর করতে হয় চীনের ওপর। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের ইলেকট্রনিক খাতে।
উচ্ছাস ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে ওদের (চীন) কলকারখানা বন্ধ আছে, সেক্ষেত্রে কেউ কেউ স্টক থাকা সত্ত্বেও দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রাইজ এখন সকালে একরকম, বিকেলে একরকম, রাতে একরকম।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাস্টমার সব সময় কম টাকায় খোঁজে। সেক্ষেত্রে চায়নার মত প্রাইজ দেওয়া একটু টাফ।’
পাইওনিয়ার মার্চেন্টের সিইও ইঞ্জিনিয়ার শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘শুধু তো আমাদের মালের দাম বাড়েনি, অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীসহ সমস্ত জিনিসের দাম বেড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চায়নার মত বিকল্প তো দেখছি না। তাইওয়ান, কোরিয়া, জাপান বানায় কিন্তু বাংলাদেশে প্রচণ্ড দাম।’
করোনাভাইরাসের কারণে চীনে সব ধরনের শিল্প কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নববর্ষ উপলক্ষ্যে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহের রাষ্ট্রীয় ছুটি থাকলেও করোনাভাইরাসের আক্রমণে সেই ছুটি বাড়তে বাড়তে ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। চীনের শিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত হুবেইসহ অনেক রাজ্যে ছুটির সময় আরো বেড়েছে। তাই দেশের আমদানিকারকদের আশঙ্কা, দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে দেশের ইলেকট্রনিক বাজারের সংকট। এদিকে দাম ও সহজলভ্যতার কারনে চীনের বিকল্প কোন দেশের কথাও ভাবতে পারছেন না তাঁরা।
ভিস্তার লাইটিংয়ের চেয়ারম্যান এম এ হায়দার বলেন, ‘এপ্রিল পর্যন্ত এ ক্রাইসিস থাকবে।’
আমদানিকারকরা জানান, চীন থেকে পন্য আমদানি করতে সময় প্রয়োজন হয় ১৫ থেকে ২০ দিন। আর ১৫ ফেব্রুয়ারির পর চীন তাদের বাজার খুললেও দেশের বাজারের এই সংকট কমতে কমপক্ষে আরো এক মাস সময় লাগবে বলে জানান তাঁরা।