ই-লার্নিং কি প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার সর্বোত্তম বিকল্প?
কোভিড-১৯ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে নিয়ে গেছে একটি ভিন্ন পর্যায়ে। মহামারি চলাকালে যখন সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, তখনই ক্লাস পরিচালনার পদ্ধতিগুলো প্রথাগত পদ্ধতি থেকে ই-লার্নিং পদ্ধতিতে পরিবর্তিত হতে শুরু করে। প্রযুক্তিটি মহামারির আগেও উপস্থিত ছিল, তবে তখন শুধু মিটিংয়ের উদ্দেশ্যে এবং কনফারেন্স কলের জন্য ব্যবহৃত হতো। কিন্তু মহামারি ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মকে আমাদের প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার সর্বোত্তম বিকল্প হিসেবে চিন্তা করতে বাধ্য করেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণত বিভিন্ন বিভাগে পেশাদার কোর্স অফার করে থাকে। এ ছাড়া নতুন গৃহীত পদ্ধতির প্রভাব একাডেমিক সেক্টরে বেশ স্পষ্ট; কিন্তু ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পটভূমির মানুষকে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করছে।
আজকাল প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে, আইটি শুধু আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে না, বরং ক্যারিয়ারে সফলতা প্রাপ্তির জন্য আইটিতে দক্ষ হওয়া বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। আর এখানেই ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মটি বেশির ভাগ ব্যবহারকারীর জন্য দারুণভাবে কাজে এসেছে। কারণ, অফলাইন ক্লাস বা আপস্কিলিংয়ের জন্য প্রশিক্ষণ অর্জন করার ক্ষেত্রে মূল বাধা ছিল তাদের ব্যস্ত দৈনিক সময়সূচি, যা দূরীভূত হয় এই অনলাইন কোর্সে নথিভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে। আর এই অনলাইন কোর্সগুলো সাধারণত নিয়ে থাকেন পেশাদার ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকেরা। তাই এই ধরনের কোর্সগুলো অনুশীলনের উপকরণ, নোট, আপডেট করা পাঠ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান অফার করে, যা যে কারও জীবনবৃত্তান্তে একটি মূল্যবান সংযোজন হতে পারে।
এ ছাড়া এই ধরনের একটি প্ল্যাটফর্মে যারা নিয়মিত থাকে, তারা খুব সহজেই ক্যারিয়ারের জন্য প্রয়োজনীয় স্কিল রপ্ত করতে পারে।
যা-ই হোক, বাংলাদেশের স্থানীয় ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো কেবল একে অপরের প্রতিযোগী নয়, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলোও দেশের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে রয়েছে। উপরন্তু, যদিও সরকারের এটুআই (a2i) প্রকল্প এই ধরনের শেখার পদ্ধতিকে অত্যন্ত উৎসাহিত করে, কিন্তু বাংলাদেশে এখনও ইন্টারনেট সংযোগের জন্য কিছু ক্ষেত্রে অভাব রয়েছে এবং একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনও স্মার্টফোন ব্যবহার করে না, যা গ্রামাঞ্চলে আরও বেশি এক্সপোজার পেতে ই-লার্নিংয়ের জন্য বাধা হিসেবে কাজ করতে পারে।
যদিও ঐতিহ্যগত শিক্ষার তুলনায় ই-লার্নিংয়ের অনেক সম্ভাব্য সুবিধা রয়েছে, কিন্তু ধারণার নতুনত্বের কারণে, মানুষ এখনও এটি গ্রহণ করতে নারাজ। তাই সরকার ও প্ল্যাটফর্ম উভয়েরই সচেতনতামূলক উদ্যোগ নেওয়া দরকার, যাতে মানুষ এর সুবিধাগুলো বুঝতে পারে।
লেখক : হেড অব লার্নিং অ্যান্ড ডিজিটাল বিসনেস, ডটলাইনস