জীবন বাজি রেখে এনটিভির ক্যামেরাম্যানরা কাজ করছেন

Looks like you've blocked notifications!

২০০৩ সালে এনটিভির শুরুতেই সিনিয়র ক্যামেরাম্যান হিসেবে যোগ দিই। তিন বছর পর অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ ক্যামেরাম্যান হিসেবে পদোন্নতি হয়। ২০১২ সাল থেকে চিফ ক্যামেরাম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।

আমরা যাঁরা ক্যামেরা সেকশনে আছি, আমাদের কাজ হচ্ছে ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করা। কাজের সুবিধার্থে আমাদের দুটি ভাগ রয়েছে। নিউজ ক্যামেরাম্যান আর প্রোগ্রাম ক্যামেরাম্যান। নিউজ ক্যামেরাম্যান আবার দুভাগে বিভক্ত। ইনডোর ক্যামেরাম্যান আর আউটডোর ক্যামেরাম্যান। আউটডোরে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা রিপোর্টারদের সঙ্গে নিউজ সংগ্রহ করতে যান। আরেক দল আছে, যাঁরা নিউজ স্টুডিওতে ক্যামেরা পরিচালনা করেন। আর বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান ও রিয়েলিটি শো করার জন্য এনটিভির শক্তিশালী ক্যামেরা টিম রয়েছে, যাঁরা সারা বছরই বিভিন্ন অনুষ্ঠান নির্মাণ ও রিয়েলিটি শো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।

আমরা যখন এনটিভিতে কাজ শুরু করি, তখন আমাদের ক্যামেরা ছিল মাত্র তিনটি। এই ক্যামেরা দিয়েই আমরা নিউজ কভার করেছি। সেটি সম্প্রচারও করেছি। প্রায় চার মাস আমরা এভাবেই কাজ করেছি। পরে অবশ্য অনেকগুলো ক্যামেরা চলে আসে। সঙ্গে আমাদের ক্যামেরাম্যানের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

যেহেতু আমাদের চ্যানেলটি সংবাদ ও অনুষ্ঠানের সংমিশ্রণ, তাই আমাদের কাজও বেশি। অনেক সময় জীবন বাজি রেখেও কাজ করতে হয়েছে। এমনও হয়েছে, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আমাদের রিপোর্টারসহ ক্যামেরাম্যান আহত হয়েছেন। আবার একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমাদের ক্যামেরাম্যান জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন। এখন সবাই সেই ভিডিও প্রচার করে।

বিএসইসি ভবনে দুবার আগুন লেগেছে। তবে আমরা একটি দিনও নষ্ট হতে দিইনি। প্রথম দিন বাসায় থেকে, পরের দিন একটি হোটেল থেকে আমরা ক্যামেরা টিম পরিচালনা করেছি। শুধু তা-ই নয়, আগুনে অনেক ক্ষতি হতে পারত। যখন আগুন লাগে, আমরা ক্যামেরাম্যানরা সবাই হাতে করে ক্যামেরাগুলো নিয়ে নিচে নেমেছি। যে কারণে ক্যামেরার কোনো ক্ষতি হয়নি।

দীর্ঘ এই পথচলায় আমাদের বেশ কিছু সফলতা রয়েছে। এর মধ্যে বলতে পারি, আমরা দেশের সবচেয়ে বড় রিয়েলিটি শো করেছি। যেমন—ক্লোজআপ ওয়ান, যা সারা দেশে অনেক বড় সফলতা পেয়েছে। এরপর যদি বলতে চাই, কক্সবাজারে আমরা অনেক বড় একটি কনসার্ট করেছিলাম, যেখানে একসঙ্গে ১১টি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া নিউজের ক্ষেত্রে আমাদের বেশ কিছু সফলতা রয়েছে। আমাদের ক্যামেরাম্যানরা নিজের জীবন বাজি রেখে এমন কিছু নিউজ কভার করেছেন, যার ফুটেজ দেশের মধ্যে শুধু আমাদেরই রয়েছে।

আমরা ‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ স্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রতি সপ্তাহেই আমরা ক্যামেরাম্যানদের নিয়ে ওয়ার্কশপ করি। সেখানে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে ক্যামেরার যে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হচ্ছে, সেটির ওপর আমরা সবাইকে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করি। বর্তমানে আমরা যে ক্যামেরাগুলো ব্যবহার করছি, সেগুলোর সঙ্গে যেকোনো সময় আমরা স্টুডিওতে কানেক্ট হতে পারি। এতে করে লাইভ প্রচার করতে পারি যেকোনো বিষয়। একই ক্যামেরা অনেকগুলো টিভি চ্যানেলে ব্যবহার করলেও আমরা লাইভের জন্য যে ডিভাইসটি ব্যবহার করি, সেটি অন্য কোনো টিভি চ্যানেলের আছে বলে আমার জানা নেই।

লেখক : চিফ ক্যামেরাম্যান, এনটিভি