সবাই এনটিভির পরিচ্ছন্ন স্ক্রিনের প্রশংসা করে

Looks like you've blocked notifications!

২০০৯ সালে এনটিভির ব্রডকাস্ট অপারেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করি। বর্তমানে সিনিয়র ম্যানেজার হিসেবে বিভাগটির দায়িত্বে রয়েছি। দীর্ঘ এই পথচলায় নানা অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গিয়েছি।

‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ স্লোগান নিয়ে এনটিভির জন্ম। আর আগামীর পথে চলতে চলতে সাফল্যের সঙ্গে ১৭ বছর পার করেছে বেসরকারি এই স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল। আমাদের প্রতিষ্ঠানটির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। ৩ জুলাই ১৮ বছরে পা রাখছে এনটিভি। এই সাফল্যের সঙ্গী হতে পেরে নিজের অনুভূতি সত্যিই দারুণ।

চ্যানেলের ব্রডকাস্ট সিস্টেম, অস্থায়ী পিসিআর সেট, সাব-স্টেশন, জেনারেটর, ইউপিএস থেকে শুরু করে অনুষ্ঠান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত অনেক দায়িত্বই পালন করতে হয় এই বিভাগকে। কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লাইভ দেখাতে হয় দর্শককে। সেখানেও বড় ভূমিকা রাখে আমাদের বিভাগ। কোথাও আমাদের চ্যানেল দেখতে সমস্যা হচ্ছে কি না, সেটিও আমরা পর্যবেক্ষণ করে থাকি।

আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা পার করতে হয় যখন বিএসইসি ভবনে আগুন লাগে। কারণ, সে সময় আমাদের ব্রডকাস্টের সব কেব্‌ল ও অনেক যন্ত্রপাতি পুড়ে যায়। এমন অবস্থায় মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে আমরা আবারও অনএয়ার করতে সক্ষম হই। অটো পদ্ধতি থেকে পুরো ম্যানুয়ালে সব চালাতে হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, রি-ইন্টিগেশনের সময় বর্তমান সিস্টেম চালু করতে হয়েছে।  দুটো সিস্টেম একসঙ্গে চালু রেখে কাজ করাটা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল।

লাইভ দেখানোর পুরো বিষয়টি আমরা নিয়ন্ত্রণ করি। একসময় আমরা স্যাটেলাইট ব্যবহার করে লাইভ করতাম। তারপর ফাইবার ব্যবহার করেছি। তবে এগুলো অনেক ব্যয়বহুল ছিল। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমরা লাইভ স্ট্রিম বা ব্যাকপ্যাক ব্যবহার শুরু করি। তবে বর্তমানে ক্যামেরা স্ট্রিমিং ও মোবাইল অ্যাপ দিয়ে লাইভ করতে পারি। ক্যামেরা ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লাইভ করার ফলে আমাদের ব্যাকপ্যাক খরচ কমে গেছে। এটা আমাদের বড় অর্জন। শুধু তা-ই নয়, ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভগুলোও আমরা নিয়ন্ত্রণ করছি।

প্রথম অর্জন আমাদের পরিচ্ছন্ন স্ক্রিন, যা দেখে সবাই প্রশংসা করেন। সেটা করতেও আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। যেকোনো কিছু দ্রুততার সঙ্গে আমরা সারা দেশ থেকে লাইভ দেখাতে পারি পরিচ্ছন্নভাবে। এটাও আমাদের বড় অর্জন। আমাদের ছবির পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন শব্দ মানুষকে আকর্ষণ করে।

আমাদের পরে যে টিভি চ্যানেলগুলো এসেছে, তারা অনেকেই আমাদের যন্ত্রপাতি অনুসরণ করার চেষ্টা করেছে। কারণ, আমরা সব সময় বিশ্বের সেরাটি ব্যবহার করেছি। অনেকেই শুনলে অবাক হবেন, আগুনে আমাদের যা পুড়ে গিয়েছিল ও ধোঁয়ায় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, সেগুলো আমরা পরিষ্কার করার পর রিপেয়ার করে ব্যবহার করেছি, তা এখনো চলছে। ভালো মানের যন্ত্রপাতি না হলে কিন্তু নষ্ট হয়ে যেত। আমাদের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সব সময় বিশ্বমানের যন্ত্রপাতি দিয়েছে।

ব্রডকাস্ট অপারেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কথা যদি বলি, প্রতিদিনই প্রযুক্তি আপগ্রেড হচ্ছে। আমরাও সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের চ্যানেলটি স্ট্যান্ডার্ড ডেফিনেশনে চলছে। আমরা সেটিকে হাই ডেফিনেশনে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি। তখন হয়তো আরো ভালো লাগবে দর্শকের। তবে আমরা এরই মধ্যে অনুষ্ঠান, নাটক বা নিউজগুলোতে কিন্তু হাই ডেফিনেশন ব্যবহার করছি। আশা করি, আগামীতে আমরা ব্রডকাস্টও হাই ডেফিনেশনে করতে পারব।

সবশেষে এটুকু বলব, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, কর্মী, দর্শক, বিজ্ঞাপনদাতা ও শুভানুধ্যায়ীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছাড়া যেকোনো প্রতিষ্ঠান সাফল্যের শীর্ষে যেতে পারে না। তাই শুভ এ ক্ষণে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

লেখক : সিনিয়র ম্যানেজার, ব্রডকাস্ট অপারেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এনটিভি