পাঠকের কলাম

বাস্তবজীবনে ভুট্টোর ‘আয়নাবাজি’

Looks like you've blocked notifications!

শরাফত করিম আয়না (চঞ্চল চৌধুরি), পেশায় একজন সাধারণ অভিনয় শিক্ষক। পাড়ার স্কুলে বাচ্চাদের সে নাটক শেখায়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই এক-দুই মাসের জন্য উধাও হয়ে যায় সে। কারণ হিসেবে সবাইকে জানায় জাহাজে রান্নার কাজ করে অর্থাৎ সে একজন ‘কুক’। কিন্তু এর আড়ালে সে অন্যের হয়ে জেল খাটে। অর্থাৎ প্রভাবশালী কোনো লোকের অপরাধের  সাজা ভোগ করে টাকার বিনিময়ে। অভিনয় তার নেশা। বাস্তব জগতেও তিনি অভিনয় করেন। হ্যাঁ, অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত বাংলা ছবি ‘আয়নাবাজি’র কথাই বলছি। কিন্তু আজ বাস্তবেই আয়নাবাজির গল্প বলব।

নাম তার রিপন আহমদ ভুট্টো। বাস্তব জগতের রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করা যার পেশা। হত্যার দায়ে অভিযুক্ত প্রভাবশালী ইকবাল হোসেন বকুল। সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের আলী আকবর সুমন হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে তার। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এমনটাই জানা যায়। কিন্তু বিত্তবান এই লোকের কি আর জেলে যাওয়ার সময় আছে? খুঁজে বের করল ভুট্টোকে। তাকে দেখাল টাকার লোভ। তাতেই কাজ হয়ে গেল! বকুল চলে গেল সৌদি আরব। আর তার হয়ে ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর থেকে কারাজীবন ভোগ করছে ভুট্টো। বাস্তব জীবনে আয়নাবাজির নায়ক রিপন আহমদ ভুট্টো এই অভিনয়কে পেশা হিসেবেই নিয়েছে।

গণমাধ্যম থেকেই প্রথম এই ঘটনা সবার নজরে আসে। পরে তাকে হত্যা মামলা থেকে আদালত মুক্তি দিলেও প্রতারণার দায়ে তাকে অভিযুক্ত করে। প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে রিপন আহমদ ভুট্টো, অ্যাডভোকেট শাহ আলম, মূল আসামি ইকবাল হোসেন বকুলের ভাই শামীম আহমদ ও বিআরটিএ অফিসের দালাল লিয়াকত হোসেনকে। এখন দেখার বিষয় প্রকৃত আসামি  ইকবাল হোসেন বকুল আদৌ শাস্তি পায় কি না। আর পেলেও কেমন হবে এই শাস্তি!

তবে কি এমন আয়নাবাজি বাস্তবজগতে প্রতিনিয়ত ঘটছে? হয়তো ঘটছে। চলচিত্র তো বাস্তবতারই একটি রূপ। হয়তো ভয়ঙ্কর কোনো এক অপরাধী আমাদের চারপাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর তার হয়ে লাল দালানে রয়েছে শরাফত করিম আয়না অথবা রিপন আহমদ ভুট্টোর মতো অনেকেই।

লেখক : শিক্ষার্থী, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়