১৭ মার্চ

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশুদিবস

Looks like you've blocked notifications!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতা ছিলেন শেখ লুৎফর রহমান, তাঁর বাবা-চাচারা অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর দাদারা ছিলেন শেখ অছিমুদ্দিন, শেখ আবদুল হামিদ, শেখ আবদুর রহমান ওরফে নশু মিয়া, তাঁদের বাবা-চাচারা ছিলেন শেখ আকরাম, শেখ তাজউদ্দিন, শেখ কুদরাত উল্লাহ ওরফে কদু শেখ, তাঁদের বাবা ছিলেন শেখ বোরহান উদ্দিন, তাঁর বাবা ছিলেন শেখ মাহমুদ ওরফে তেকরি শেখ, তাঁর বাবা ছিলেন শেখ জহির উদ্দিন এবং তারই পূর্বপুরুষ ছিলেন দরবেশ শেখ আবদুল আউয়াল। আর বঙ্গবন্ধুর পরের প্রজন্মের মধ্যে তাঁর পাঁচ সন্তান হলো- শেখ হাসিনা, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা ও সর্ব কনিষ্ঠ শেখ রাসেল। তাঁদের মধ্যে বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর অপর ছোটবোন শেখ রেহানা ছাড়া বাকি সবাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঘাতকের নির্মম বুলেটে অকালে প্রাণ হারান যা আমরা সবাই আজ জানি। 

আজ শেখ হাসিনার দুই সন্তানের মধ্যে ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল যাঁরা প্রত্যেকেই বর্তমানে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত। ভাগ্যচক্রে বেঁচে যাওয়া অপর বোন শেখ রেহানার তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ছেলে রেজওয়ান সিদ্দিক ববি, মেয়ে রেজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপ ও রূপন্তী। তাঁদের মধ্যে রেজওয়ানা সিদ্দিক টিউলিপ তাঁর নানা বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নাতনি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন। কারণ তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী হিসেবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ঐতিহ্যবাহী লেবার পার্টির গর্বিত এমপি। 

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের সাথে তাঁর বংশ পরিচয়ের বিষয়টি খুবই যুক্তিযুক্ত এ কারণে যে, মানুষের সব শিক্ষা যে তাঁর বংশ থেকেই আসে। কাজেই শেখ মুজিব গোপালগঞ্জের অজপাড়াগাঁয়ের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মালেও তাঁর বংশ পরিচয় ও তাঁর কর্ম তাঁকে শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু এবং পরে জাতির পিতা তৈরি করেছিলেন। মধুমতি নদীটি টুঙ্গিপাড়া গ্রাম ঘেঁষেই বয়ে গেছে যার একটি শাখানদী হলো বাইগার নদী। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পরপর ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ এই বাংলার ছায়াভরা গ্রামীণ জনপদের আবহে  গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেওয়া লৌহমানবসম যে ব্যক্তিটি ঘাতকের বুলেটের আঘাতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে প্রাণ দিয়েছেন, তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক, জতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অথচ কে জানত, মুজিব নামের যে ছেলেটি সেদিন বাবা শেখ লুৎফর রহমান ও মা সায়রা খাতুনের কুলজুড়ে বুক আলোকিত করে একটি ছোট্ট বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল সেদিনই আসলে। কারণ আমরা জানি এবং রাজনৈতিক ইতিহাসবিদগণের বৈশ্লেষণিক ধারণামতে বর্ণনা করা হয় যে, বাংলার এ ভূমিতে বঙ্গবন্ধুর মত নেতেৃত্বের জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামের কোনো দেশই পৃথিবীর মানচিত্রে সৃষ্টি হতো কি না সন্দেহ ছিল। 

টুঙ্গিপাড়া নামক একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করে পৃথিবী বিখ্যাত একজন নেতা হওয়া, আসলেই অবিশ্বাস্য ব্যাপার। জন্মের পর থেকে আমৃত্যু তাঁর প্রতিটি চলাফেরা আচার-আচরণ ছিল খুবই সহজ, সরল ও সাধারণ। তাঁর বাবা শেখ লুৎফর রহমান সরকারি চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন স্থানে বদলি হতে হয়েছে তাঁকে। সেজন্য শেখ মুজিবসহ তাঁর ভাইবোনদের বেশিরভাগ সময়ই বাবাকে ছাড়াই বাড়িতে থাকতে হয়েছে। সেজন্য শিশু ও কৈশোরের সময়গুলো গ্রামীণ পরিবশে সাধারণ মানুষের সাথে সুখে-দুঃখে কাটিয়েছেন। আর তখনই তাঁর টুঙ্গিপাড়া গ্রামের গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুল দিয়ে লেখাপড়া শুরু করেন তিনি। পরে বাবার চাকরির কর্মস্থল মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জে মিশনারি স্কুলে লেখাপড়া করেন তিনি। 

বাবা-মা ও দাদা-দাদির আদরে ধন হিসেবে তাঁকে খোকা বলে ডাকা হতো। সেই খোকাই একসময় বাংলাদেশ নামের একটি দেশের স্রষ্টা হলেন এবং নিজ যোগ্যতা বলে বিশ্বনেতার আসনেও অধিষ্ঠিত হওয়ার প্রয়াস পেয়েছিলেন তিনি। জনশ্রুতি আছে বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে একসময় বাল্যবিবাহের বেশ প্রচলন ছিল। আবার মুসলিম সমাজে নিকট আত্মীয়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার রেওয়াজ অবশ্য এখনো প্রচলিত রয়েছে। সেভাবেই সেই খোকাকে পারিবারিক সিদ্ধান্তেই অল্প বয়সেই চাচাত বোন রেনুর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়। 

সেই মহীয়সী রেনু আজকের মাননীয় প্রশানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। আমরা এও জানি যে, তিনি যে শুধুই শেখ হাসিনারই মা তাই নয় তিনিও তাঁর দেশ প্রেমিক কর্মকাণ্ডের জন্য কোটি বাঙালির হৃদয়ে স্থান করে নিয়ে বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন। অথচ আজকের স্বীকৃত জাতির জনককে এতটুকু রাস্তা পাড়ি দেওয়ার জন্য সেই ছোট বেলা থেকেই তাঁকে আন্দোলন সংগ্রাম করে যেতে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তাঁকে জেল খাটতে হয়েছে বহুবার। তিনি ছোটবেলায় তাঁর প্রাইমারি ও হাইস্কুলের গণ্ডির মধ্যেই তৎকালীন বাঘা বাঘা মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজেকে একজন যুক্তিবাদী সুবক্তা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। এখানেও একটি সুন্দর একটি উদাহরণ রয়েছে, গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে পড়ার সময় স্কুল পরিদর্শনে এলেন সেই সময়কার মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। সেখানে কিশোর মুজিব সেদিন স্কুলে ছাত্রদের পক্ষে মন্ত্রীর নিকট থেকে স্কুলের দুরাবস্থার জন্য তাদের দাবি আদায় করেছিলেন। সেদিন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শেখ মুজিবের মাথায় হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ করে দিয়েছিলেন। 

ঠিক একইরকম একাধিক ঘটনা শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের ক্ষেত্রে ঘটেছিল। পরে রাজনৈতিক জীবনে তিনি যে তাঁদের শিষ্যত্ব বরণ করেছিলেন তা আমরা সবাই জানি। ছোটবেলা থেকেই তিনি জনদরদি সেটা তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের দ্বারা প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি তাঁর সেই সময়ের গরিব-দুঃখী সহপাঠীদের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অনেক সময় নিজের গায়ের জামা, শীতের চাদর, পরনের জুতো ইত্যাদি দিয়ে দিতেন। আর এর জন্য তিনি বাড়িতে এসে প্রশ্নের সম্মুখীন হলেও বকুনি খেতে হয়নি। কারণ বাড়ির লোকেরাও তাঁর দানশীলতা উৎসাহের চোখেই দেখতেন। 

পরে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হওয়ার সুবাদে প্রত্যক্ষ সান্নিধ্য লাভ করেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীসহ আরো অনেক সর্বভারতীয় জাতীয় নেতার সাথে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তিলাভ, পশ্চিম পাকিস্তানি হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা, ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিমলীগ গঠন, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ, ১৯৫৪ তে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রাদেশিক মন্ত্রিসভায় যোগদান। 

তা ছাড়া ৬২-র শিক্ষা আন্দোলন ও সর্বোপরি ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আস্তে আস্তে পূর্ববাংলাকে প্রথমদিকে স্বাধিকার ও স্বায়ত্ত্বশাসনের বিষয়ে অগ্রগামী হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে ১১ দফা ও ৬ দফা একাকার হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই চূড়ান্ত স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আওয়ামী লীগ গঠনের সময় সেটার নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। প্রতিষ্ঠাকালীন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন সভাপতি, শামসুল হক ছিলেন সাধারণ সম্পাদক এবং সেদিনের তরুণ শেখ মুজিব ছিলেন সে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। 

পরবর্তীকালে ১৯৫৫ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি আওয়ামী লীগের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক হন। সেজন্য তিনি যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন যার নজির এখন আর খুব একটা দেখা যায় না কোনো দলেই। সবাই যত বেশি পারা যায় ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। যাহোক, তিনি ছয় দফার আগেই ১৯৬৬ সালে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। তখন তিনি শুধু আওয়ামী লীগের নয়, সারা বাংলার গণমানুষের নেতা হতে থাকেন। সেজন্যই ছয়দফায় স্বাধীকারের দাবির মাধ্যমেই সর্বপ্রথম মনে মনে স্বাধীনতা রেখে স্বায়ত্বশাসন দাবি করতে থাকেন। সেখানে মূল লক্ষ্য ছিল তৎকালীন পূর্ববাংলার স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতার জন্যই মার্চে প্রথমসপ্তাহে পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়ার পর অত্যন্ত সুকৌশলে স্বাধীনতার ডাক দিতে গিয়ে তাঁর গ্রেপ্তার অবশ্যম্ভাবী জেনে তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ইতিহাসের সেই বিখ্যাত নির্দেশনামূলক ভাষণ প্রদান করেন যা বাঙালির ম্যাগনাকার্টা হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। 

সেদিনের সেই ভাষণ শুনলে এখানো যেকোনো চেতনাবাদী বাঙালির হৃদয়-মনকে দোলা দেয়। সেই ভাষণের কিছু শব্দ এখনো শুনলে বুঝতে অসুবিধা হ য়না যে তিনি আসলে একজন রাজনীতির কবি ছিলেন। সেখানে তিনি তাঁর বজ্রকণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাল্লাহ। যা কিছু আছে তা নিয়েই প্রস্তুত হও, শত্রুর মোকাবিলা কর... জয় বাংলা ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক অমিয় বাণী। তিনি জেলে বসে রচনা করেছিলেন ইতিহাসের আরেক আত্মকথন, তাঁর অমর অসমাপ্ত আত্মজীবনী। তিনি শিশুদের খুব ভালোবাসতেন। সেজন্য আমরা তাঁর অনেক রাষ্টীয় কর্মকাণ্ডে তাঁর কনিষ্ঠ মাত্র ১১ বছরের সন্তান শেখ রাসেলকে দেখা যেত। সেজন্য বঙ্গবন্ধুর অনেক স্মৃতিময়  ছবির সাথে শেখ রাসেলের ছবি দেখা যায়। তা ছাড়া তিনি যেখানেই যেতেন শিশুদের খুব আদর করতে দেখা গেছে। তাঁর সেই শিশুপ্রীতির প্রতি সম্মান জানানোর জন্য তাঁর জন্মদিন ১৭ মার্চকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়- যা খুবই যুক্তিযুক্ত। 

বঙ্গবন্ধুর আমৃত্যু সংগ্রামের পরে দেশের জন্য মাত্র সাড়ে তিন বছরে যা করে গেছেন সেখানেও দেখা যায় তিনি দেশের উন্নয়নের প্রতিটি জায়গাতেই হাত দিয়েছিলেন। বাস্তবে তিনি যে সেগুলোর সবই শেষ করে যেতে পেরেছিলেন এমনটি নয়। তাঁর মৃত্যুর পর একুশ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন অপপ্রচারের মাধ্যমে তাঁর গড়া দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসীন হতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে বর্তমানে দলটি তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো সফলভাবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছে। দেশকে আজ উন্নয়নের শিখরে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন তিনি। তাঁর অসমাপ্ত কাজগুলোই তিনি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। শেখ মুজিব যেমন দেশবিদেশের ভালোবাসা পেয়ে সিক্ত হয়েছিলেন জাতির জনক ও বঙ্গবন্ধু উপাধিতে, ঠিক সেই রকমই তাঁরই কন্যাও আজ তাঁরই পথে হেঁটে দেশবিদেশে সুনাম কুড়াচ্ছেন, পাচ্ছেন সম্মান ও মর্যাদা। পেয়েছেন দেশরত্ন ও কৃষকরত্ন ইত্যাদি আরো অনেক উপাধি। এবার তাঁর ৯৬তম জন্মদিন ও শিশুদিবসে রইল শুভেচ্ছা এবং আদর্শিক এক শুভাযাত্রা ও অগ্রযাত্রার প্রত্যয়।

লেখক : ডেপুটি রেজিস্ট্রার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।