ফেসবুকে ৭০ লাখ

নতুন উচ্চতায় এনটিভি অনলাইন

Looks like you've blocked notifications!

এখন বিশ্ব চলছে ডিজিটাল ব্যবস্থায়। মানুষের জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে দিয়েছে এ ডিজিটাল ব্যবস্থা। কী নেই এ ডিজিটাল ব্যবস্থার ভেতরে! কেউ কোনোদিন কল্পনাও হয়তো করেনি যে দৈনন্দিন প্রথাগত গণমাধ্যম হিসেবে ছাপানো পত্রপত্রিকার বদলে কিংবা পাশাপাশি ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিদিনকার তাজা খবরগুলো মানুষের দ্বারপ্রান্তে চলে আসবে।

তাজা খবরের সবচেয়ে অ্যাপ্রোপ্রিয়েট মাধ্যম হলো রেডিও ও টেলিভিশন। রেডিওতে সচিত্র সংবাদ পাওয়া যায় না কিন্তু টেলিভিশনে সেটার সুযোগ রয়েছে। একসময় সরকার নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের ওপরই দেশ-বিদেশের তাজা খবরের জন্য নির্ভর করতে হতো। তখন বিকল্প দেশি-বিদেশি কোনো চ্যানেল ছিল না। কিন্তু তারপরও রেডিওতে ভয়েস অব আমেরিকা কিংবা বিবিসির খবরের জন্য অপেক্ষা করে থাকতে দেখা গেছে মানুষকে। দৈনন্দিন পত্রপত্রিকায় খবর পেতে হলে তা বিস্তারিতভাবে জানার সুযোগ থাকলেও ঘটনার কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টার আগে সে খবর জানার কোনো সুযোগ নেই।

তারপরও রাজধানী থেকে যে স্থানের দূরত্ব যত বেশি, সে স্থানে খবরের কাগজ পেতে ২৪ ঘণ্টার চেয়ে অনেক বেশি সময় অপেক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে। এখন সারা দেশে যদিও বা যোগাযোগব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে, তারপরও সে অবস্থা কাটেনি সে জন্য যেহেতু সবকিছুতে ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রভাব পড়েছে, সে জন্য সংবাদপত্রও এর বাইরে নেই। দেখা গেছে কোনো একটি সংবাদপত্র সংশ্লিষ্ট দিনের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো দিয়ে সেটির প্রিন্ট এডিশন প্রকাশ করল। পরে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটলে তা আবার তাদের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশ করছে যা ২৪ ঘণ্টাব্যাপী বিস্তৃত থাকছে। ফলে এসব সুবিধা পাঠকসমাজ পাচ্ছে। তা ছাড়া তরুণদের একটি বিরাট অংশ এখন আর পত্রপত্রিকার প্রিন্ট এডিশনের জন্য অপেক্ষা করে থাকে না। সেই রকমই একটি অনলাইন পোর্টালের দ্রুত বিস্তৃতির খবর দেখলাম গতকাল অর্থাৎ ২১ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে। দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি টেলিভিশন চ্যানেল হলো ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল লি. (এনটিভি)। সেটি এরই মধ্যে তার প্রতিষ্ঠার যুগপূর্তি করেছে। একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল যে কতটুকু নিরপেক্ষভাবে তার অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারে, সেটার উদাহরণ খুব কমই আছে। আর সেটাই বোধ করি এনটিভির সুনাম ও পুঁজি।

সেই সুনামকে পুঁজি করেই ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে এনটিভি অনলাইন নামের নিউজ পোর্টাল। আগামী ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে এটি পূরণ করবে তার দুই বছর। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালে যাত্রা করবে তৃতীয় বছরে। সময়ের হিসেবে এ নিউজ পোর্টালের পৌনে দুই বছর সময় খুবই কম। তারপরও শুধু সুনাম, নিরপেক্ষতা, বৈচিত্র্যতার কারণে এটি আজ দেশের অনলাইন পোর্টাল এখন চার নম্বরে। তারই ধারাবাহিকতায় সেটি এখন ফেসবুকে পৌঁছে গেছে ৭০ লাখ দর্শক ও পাঠকের কাছে। এরই মধ্যে পোর্টালটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার হয়ে উঠেছে। আমি নিজেও এ পোর্টালের একজন নিয়মিত পাঠক ও লেখক হিসেবে এর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধিতে গর্ব বোধ করছি। কারণ আমি একজন পাঠক হিসেবে যখন এ পোর্টালে ক্লিক করি, তখন সব তথ্যভাণ্ডার চোখের সামনে অবারিত হয়ে ওঠে।

এ পোর্টালটি অন্য অনেকের মতো আমার শিক্ষণীয় একটি গণমাধ্যম হয়ে উঠতে পেরেছে। এখন বিশ্বের অনেক নামি-দামি পত্রিকা তাদের প্রিন্ট অ্যাডিশন বন্ধ করে দিয়ে শুধু অনলাইন হিসেবে পরিচালনা করছে। একসময় আমাদের দেশেও এমনটি হতে পারে। তখন এনটিভি অনলাইন হবে পথিকৃৎ। তবে পোর্টালটি এখন যে গতিতে এবং যে মানে চলছে সেটি অব্যাহত রাখতে হবে।

কারণ এখন পাঠকদের আঙুলের মাথায় হাজারো অপশন। একটি স্মার্টফোনই এখন সারা বিশ্বের সব ধরনের তথ্যের জন্য অবারিত ও উন্মুক্ত বিচরণক্ষেত্র। মান ধরে না রাখতে পারলে পাঠক নতুন কিছু খুঁজে নিতে সময় ক্ষেপণ করে না। তবে আমিসহ আমার মতো ৭০ লাখ ফলোয়ার মনে করে এনটিভি অনলাইন যেকোনো মূল্যে তার মানের সঙ্গে আগেও আপস করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। আর এর পুরো কৃতিত্ব পোর্টালটির সঙ্গে জড়িত সুদক্ষ কর্মীদের। সে জন্য ২১ নভেম্বর সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে ফেসবুকে ৭০ লাখ ফলোয়ার হওয়ায় অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান করে এই টিভি পরিবার। সে জন্য তাদের স্বাগত জানাই এবং সবার সঙ্গে আমিও এনটিভি অনলাইন পোর্টালের অগ্রযাত্রায় সাফল্য কামনা করি। 

 

লেখক : ডেপুটি রেজিস্ট্রার, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়