মালয়েশীয় ছেলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলেন বাংলাদেশি মেয়ে

সময়টা ১৯৪৮ সাল। বাংলাদেশ থেকে সুদূর মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন আবদুস সামাদ। তখন থেকে মালয়েশিয়াতেই থেকে যান তিনি। বিয়ে করেন মালয়েশিয়ান নারীকে। স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশেও এসেছিলেন আবদুস সামাদ। স্ত্রী রান্না করেছেন মাটির চুলাতেও।
বাংলাদেশিদের আতিথেয়তায় বাঙালিদের ভালোবেসে ফেলেন সামাদের স্ত্রী। তাঁর কাছে বাঙালি মানেই ভালো মানুষ। আবদুস সামাদ মারা যান ১৯৯৪ সালে। এরপর বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল সামাদের স্ত্রীর।
গত ৫ আগস্ট বিয়ের পিঁড়িতে বসেন বাংলাদেশি মেয়ে ফারজানা আক্তার পান্না এবং মালয়েশীয় ছেলে মোহাম্মদ সাফোয়ান।
পান্নার বাবা নূর মিয়া বছর ১৫ বছর আগে জীবন-জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে মালয়েশিয়ায় চলে আসেন। সেখানে আবদুস সামাদের ছেলে আবদুল হাসিমের সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মায়ের বাঙালিপ্রীতিতে প্রভাবিত হয়ে আবদুল হাসিম নিজের ছেলের জন্য পাত্রী হিসেবে বাংলাদেশি মেয়ের খোঁজ শুরু করেন। এ ব্যাপারে নূর মিয়ার সহযোগিতা চান। দুই বছর আগে সপরিবারে মালয়েশিয়াতেই বসবাস শুরু করেন নূর মিয়া। আবদুল হাসিমের আগ্রহের কথা জেনে নিজের মেয়েকেই বিয়ে দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। হাসিম এ প্রস্তাবে দারুণ খুশি হন। পুরোনো ভাঙা সম্পর্কটাকে আবার জোড়া লাগানোর সুযোগটা আর হাতছাড়া করেননি তিনি।
ধুমধাম করে মালয়েশিয়ার সব রীতি মেনে বিয়ে হয় আবদুল হাসিমের ছেলে আর নূর মিয়ার মেয়ের। মেয়েকে মালয়েশিয়ার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে পেরে নূর মিয়াও দারুণ খুশি। তিনি বলেন, ‘যেহেতু তাদের সঙ্গে আমাদের একটা পুরোনো সম্পর্ক ছিল। সেহেতু এখানে বিয়ে দিয়ে সম্পর্কটাকে আবার মজবুত করতে পেরেছি।’ তিনি সবার কাছে মেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের সংসারের সুখের জন্য দোয়া চেয়েছেন।
এ বিষয়ে আবদুল হাসিম বলেন, ‘আমার ছেলের জন্য বাংলাদেশি মেয়েকে বউ করতে পেরে দারুণ আমি খুশি। আমার বাবা একজন বাংলাদেশি ছিলেন।’
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের খুব কাছে পুচং নামক জায়গায় বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজনের কোনো কমতি ছিল না। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশিদের উপস্থিতি কম থাকলে আবদুল হাসিমের অসংখ্য আত্মীয়স্বজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। মালয়েশিয়ার রীতি অনুযায়ী বিয়ের পর স্ত্রী তিন মাসের মতো শ্বশুরবাড়িতে থাকে। এরপর ছেলে এবং ছেলের বউকে আলাদা করে দেওয়া হয়।