মহাষ্টমীর স্নানে লাঙ্গলবন্দে লাখো পুণ্যার্থী
নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে দুই দিনব্যাপী মহাষ্টমী স্নানে দেশ-বিদেশের প্রায় ১০ লাখেরও বেশি পুণ্যার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাত ৯ টা ১৭ মিনিটে লগ্ন শুরু হয়ে শেষ হবে আজ বুধবার রাত দশটা ৪৭ মিনিটে।
হিন্দু শাস্ত্রমতে ‘হে মহাভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য, আমার পাপ হরণ করো’ এই মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান-দুর্বা, হরতকি, ডাব, আম, পাতা ও ফলের সমাহার দিয়ে পিতৃকূলের উদ্দেশ্যে অর্পণ করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ললিত সাধুর আশ্রম থেকে লোকনাথ মন্দির পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে ২০ টি ঘাটে লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে চলছে মহাঅষ্টমী স্নান উৎসব। প্রতিবছরের মতো এবারও বাংলাদেশসহ ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পুণ্যার্থীরা পাপ মোচন ধুয়ে মুছে যাবে, সন্তান ও পরিবারের মঙ্গল কামনায় এই প্রার্থনা করে স্নানে অংশ নিয়েছে।
লাঙ্গলবন্দের স্নানের আয়োজক বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন জানান, মাস খানেক আগে থেকে উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। দেশের আবহাওয়া অনুকূলে আছে তাছাড়া প্রশস্ত করা হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। দুদিন আগে থেকে দেশ-বিদেশের পুণ্যার্থীরা আশ্রয় কেন্দ্রে অংশগ্রহণ করেছে। এবারে স্নানোৎসবে ১০ লাখেরও বেশি পুণ্যার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল এনটিভি অনলাইন কে বলেন, ‘২০১৫ সালে সরু রাস্তা ও অতিরিক্ত মানুষের চাপে স্নানে আসা ১০ পুণ্যার্থী পদদলিত হয়ে মারা যায়। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনা বিবেচনা করে এবার তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পুলিশ, র্যাব, আনসার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। যেকোনো বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে রাখা হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। থাকছে ওয়াচ টাওয়ার। পুরো এলাকা জুড়ে থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায়।’
পুণ্যার্থীদের সেবা দিতে পুরো এলাকা জুড়ে বিভিন্ন সেবামূলক সংগঠনের পক্ষ থেকে ৫৪টি সেবা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে বিশুদ্ধ পানি, খাবার, শিশু খাদ্য এবং মেডিকেল ক্যাম্পসহ তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।