উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা উৎসব শুরু
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব আজ রোববার থেকে শুরু হয়েছে। আগামী ৩ জুলাই উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে।
এ উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং মন্দির নানা মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজধানী ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) রথ যাত্রা উপলক্ষে নয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। প্রতিবারের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে মানিকগঞ্জের ধামরাইয়ে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস জগন্নাথ দেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগত হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছে জগতের ঈশ্বর। তাঁর অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীব রূপে তাঁকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই রথের ওপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমা রেখে রথযাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
সকালে বিভিন্ন মাঙ্গলিক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় রথযাত্রার অনুষ্ঠান মালা। এর মধ্যে ছিল হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভাগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।
ঢাকার স্বামীবাগের আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) সকালে ইসকন আশ্রমে বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মাধ্যমে রথ উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে। এ উপলক্ষে দুপুরে স্বামীবাগ ইসকন আশ্রমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভা শেষে মঙ্গলপ্রদীপ জ্বলিয়ে রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবাই সোচ্চার। এই বাংলাদেশে কেউ যাতে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াতে না পারে এবং জঙ্গিবাদ যেনো আমাদের দেশে মাথাচাড়া দিতে না পারে সে জন্য আমরা দোয়া করি।
পরে বর্ণাঢ্য সাজে তিনটি বিশাল রথে জগন্নাথ দেব, শুভদ্রা ও বলরামের প্রতিকৃতিসহ বিশাল শোভাযাত্রা বের হয়।
শোভাযাত্রাটি রাজধানীর টিকাটুলি, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা, পুরানা পল্টন, প্রেসক্লাব, দোয়েল চত্বর, টিএসসি, জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে পলাশী হয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।