আপনার জিজ্ঞাসা
জান্নাত লাভের জন্য কোন আমল বেশি বেশি করা উচিত?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৬৬তম পর্বে ইমেইলে জান্নাত লাভের জন্য কোন আমলটি গুরুত্বপূর্ণ, সে সম্পর্কে লক্ষ্মীপুর সদর থেকে জানতে চেয়েছেন রোমান হোসেন। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : জান্নাত লাভের জন্য কোন আমলটি বেশি বেশি করা উচিত?
উত্তর : আল্লাহর নবী (সা.)-এর কাছে সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ সাকাফি (রা.) এসে প্রশ্ন করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল (সা.) একটা প্রশ্ন করব আর বেশি প্রশ্ন করব না, এরপর আর কাউকে জিজ্ঞেসও করব না।’ সেই প্রশ্নের মতো আপনিও একটা প্রশ্ন করেছেন।
আল্লাহর নবী (সা.) এ প্রশ্নের উত্তরও সহজ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বলে দাও, আল্লাহর প্রতি ইমানের যে স্বীকৃতি রয়েছে সেটাকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে’। ইমানের যে হুকুমগুলো রয়েছে সেগুলো জানতে হবে, জেনে সেগুলো নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে। সত্যিকার ইমানদার হতে হবে, তথাকথিত ইমানদার হলে চলবে না। ইমানের দাবিগুলো পূরণ করতে হবে। সেই দাবিগুলো পূরণ করার জন্য সেখানেই মুস্তাকিম থাকতে হবে, অটুট, অবিচল, অটল থাকতে হবে, এদিক সেদিক করা যাবে না।
যখন এই কথাগুলো বলা হয়েছে তখন সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ সাকাফি (রা.) আল্লাহর নবী (সা.)-কে বললেন, ‘যে নবী (সা.) এটা তো কঠিন মনে হচ্ছিল, কথা খুবই সংক্ষিপ্ত, কিন্তু বিষয়টি এত বিস্তারিত এবং কঠিন যে এক্ষেত্রে আমি সবচেয়ে বেশি কোনটাকে গুরুত্ব দেব?’
যিনি প্রশ্ন করেছেন, নবী (সা.) এবং নবীর সাহাবিদের বক্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে তাঁর প্রজ্ঞা কত বেশি। তখন নবী (সা.) সব কাজকে মুস্তাকিম রাখার জন্য, সহজ-সরল রাখার জন্য একটা নির্দেশনা দিলেন। নবী (সা.) ইশারা করলেন জিহ্বা এর দিকে, বললেন, ‘এই জিহ্বাটাকে ঠিক রাখবে।’ এটাকে যদি কেউ ঠিক রাখতে পারে, সবকিছু ঠিক।
তাই মানুষ সত্যিকারভাবে ততক্ষণ পর্যন্ত মুস্তাকিম হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁর জিহ্বা ঠিক না হবে। আজকে মানুষের জিহ্বার মাধ্যমেই মূলত সবচেয়ে বেশি বিচ্যুতি হয়। পদস্থলনের চেয়ে জিহ্বার স্থলন হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। আর এ কারণেই মূলত মানুষের মৃত্যু হয়, আবার অন্য কেউ মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।
সুতরাং জান্নাত লাভ করতে হলে আগে নিজেদেরকে সংযত করতে হবে। নিজেদের বক্তব্যের সংযতির ওপর নির্ভর করছে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সংযতি, চিন্তা-চেতনার সংযতি। সবকিছু মূলত সংযত হবে তখনই যখন কেউ সত্যিকারভাবে নিজের জিহ্বাকে সংযত করতে পারবে।
জান্নাত লাভের জন্য এই আমলটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, নিজেকে সংযত রাখা, কথা বলার আগে চিন্তা করা এবং যা বলব তা পালন করা।