বেশি দামে কেনাবেচা হচ্ছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/07/beach.jpg)
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিচ হ্যাচারির চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ১৫ টাকা ১৩ পয়সা। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর ১০৩ টাকা ৭০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। ফলে সম্পদমূল্যের ছয় দশমিক ৮৪ গুণ বেশি দরে বেচাকেনা হচ্ছে এই শেয়ার। এতো বেশি দরে শেয়ারটি কেন বেচাকেনা হচ্ছে, সেই বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের।
গত সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতিবার) বিচ হ্যাচারির ৮০ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ৭৭ শতাংশ একাই করেছে কোম্পানিটি। এতে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে গত ৩০ জানুয়ারি বিচ হ্যাচারির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ৯৫ টাকা ২০ পয়সা। গতকাল বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ১০৩ টাকা ৭০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে আট টাকা ৫০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোট শেয়ারের মাধ্যমে ডিএসইর বাজারে মূলধন বেড়েছে ৩৫ কোটি ১৯ লাখ আট হাজার ৬৭৮ টাকা। গেল সপ্তাহটিতে ৩৯৫টি কোম্পানির দুই হাজার ১৩২ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেখানে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির ৮০ কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কোম্পানির গত অর্থবছরগুলোতে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এর আগের তিন অর্থবছরে দুই শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারেনি কোম্পানিটি। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ১৬ পয়সা। অপরদিক গতকাল বৃহস্পতিবার কোম্পানির শেয়ারপ্রতি দর দাঁড়ায় ১০৩ টাকা ৭০ পয়সা। যা সম্পদমূল্যের ছয় দশমিক ৮৪ গুণ বেশি দরে বেচাকেনা হচ্ছে শেয়ারটি। এতো বেশি দরে কেন বেচাকেনা হচ্ছে, সেই বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান তাদের।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, বিচ হ্যাচারি চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদনে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে এক টাকা ৮৫ পয়সা। আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ৮৮ পয়সা। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) দুই প্রান্তিকে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে দুই টাকা ৭০ পয়সা। আগের অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল এক টাকা ৩২ পয়সা। চলতি অর্থবছরের দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে ৩২ পয়সা। আগের অর্থবছরের দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ ছিল এক টাকা ২৫ পয়সা। গত ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ১৬ পয়সা।
এর আগের ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। গত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছিল দুই টাকা তিন পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল ৯৩ পয়সা। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১২ টাকা ৪৯ পয়সা।
২০০২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিচ হ্যাচারি। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৪১ কোটি ৪০ লাখ ১০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা চার কোটি ১৪ লাখ এক হাজার ২১টি। রিজার্ভে রয়েছে ১০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৩৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ, বিদেশিদের দশমিক ২১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪৩ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।