সৌরজগতের ‘জীবাশ্ম’ খুঁজতে নাসার লুসি অভিযান

Looks like you've blocked notifications!
পৃথিবী ছেড়ে বৃহস্পতির দিকে রওনা হয়েছে ‘লুসি’। ছবি : রয়টার্স

জুপিটার বা বৃহস্পতি গ্রহের কাছাকাছি যেসব গ্রহাণু ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছে নাসা। কীভাবে সৌরজগৎ তৈরি হয়েছে—সে রহস্য উন্মোচনে নাসার এ অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। একে বলা হচ্ছে—সৌরজগতের ‘জীবাশ্ম’ খোঁজার অভিযান। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে গতকাল শনিবার  ‘লুসি’ নামের মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। বৃহস্পতি গ্রহের কক্ষপথে গ্যাসের যে বিশাল আস্তরণ আছে, সেখানে ঝাঁক বেঁধে যে গ্রহাণুগুলো ঘুরতে থাকে, সেগুলো পর্যবেক্ষণ করবে মহাকাশ প্রোব লুসি।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র বিজ্ঞানীরা বলছেন—গ্রহগুলো গঠন হওয়ার সময় এসব গ্রহাণু অবশিষ্টাংশ হিসেবে রয়ে গেছে। ফলে ‘ট্রোজান’ নামে পরিচিত এসব গ্রহাণুর ভেতরে সৌরজগতের গঠন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র থাকতে পারে বলে মনে করা হয়।

আগামী ১২ বছর এই মিশনের পেছনে ৯৮ কোটি ১০ লাখ ডলার খরচ করার পরিকল্পনা করেছে নাসা। এর আগেও গ্রহাণু পর্যবেক্ষণে মহাকাশযান পাঠিয়েছে নাসা। এই সময় ধরে লুসি সাতটি ট্রোজান (গ্রহাণু) পর্যবেক্ষণ করবে।

আফ্রিকা থেকে পাওয়া মানবদেহের একটি সুপরিচিত ফসিলের নাম ‘লুসি’—যার মাধ্যমে বর্তমান যুগের মানুষের পূর্বপুরুষ সম্পর্কে অনেক তথ্য জানা গেছে। ওই নাম থেকেই নাসার এই মিশন অনুপ্রেরণা নিয়েছে এবং নামটিও। পার্থক্য হলো—এ মহাকাশযানটি ইতিহাস খুঁজবে পৃথিবী থেকে লাখ লাখ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রহে এবং বৃহস্পতির সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের চারদিকে ঘুরবে।

কলোরাডোর সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পক্ষে লুসি’র প্রধান পরীক্ষক হ্যাল লেভিশন ব্যাখ্যা করে বলছেন, ‘ট্রোজান গ্রহাণুগুলো বৃহস্পতিগ্রহের কক্ষপথে ৬০ ডিগ্রি কোণে ঘুরতে থাকে। তারা বৃহস্পতি ও সূর্যের মহাকর্ষীয় প্রভাবে আটকে আছে। সৌরজগতের শুরুতে যদি সেখানে কোনো বস্তু রাখা হয়, তাহলে সেটা চিরদিন সেভাবেই থাকবে। সুতরাং এটা বলা যায়—এগুলো আসলে কোনো গ্রহ থেকে গঠিত জীবাশ্ম।’

লুসি তার সরঞ্জাম ব্যবহার করে শহর আকৃতির এসব বস্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। এগুলোর আকার, গঠন, ভূপৃষ্ঠের উপাদান, তাপমাত্রা এবং কী দিয়ে তৈরি—এসব বিষয় পরীক্ষা করা হবে। এর পাশাপাশি বৃহস্পতি গ্রহের আশপাশে অন্য যেসব গ্রহাণু আসবে, সেগুলোও পরীক্ষা করে দেখবে লুসি।

এই মহাকাশ অভিযানে লুসি ছয়শো কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে, যা একসময় অসম্ভব বলে ভাবা হতো।