২০১৫ হবে স্মার্টওয়াচের বছর
স্মার্টফোন এখন মানুষের জীবনের অন্যতম প্রয়োজনীয় এবং জনপ্রিয় অনুষঙ্গ। স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়বে—এমন আশঙ্কা অদূর ভবিষ্যতে নেই বললেই চলে। আর এই স্মার্টফোনের হাত ধরেই আলোর মুখ দেখে স্মার্টওয়াচ। স্মার্টওয়াচের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে দ্রুত। আর প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের আগ্রহ বিবেচনা করে বাজারে আনছে নিত্যনতুন সব স্মার্টওয়াচ। বলা হচ্ছে, ২০১৫ হতে যাচ্ছে স্মার্টওয়াচের বছর।
টেক জায়ান্ট অ্যাপল গত মাসে উন্মুক্ত করেছে তাদের প্রথম স্মার্টওয়াচ ‘অ্যাপল ওয়াচ’। আশা করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই অ্যাপলের অন্যান্য পণ্যের মতো ক্রেতাদের মধ্যে আলোড়ন তুলবে এই স্মার্টওয়াচ। তবে এই লাভজনক পণ্যের বাজারে অ্যাপলের প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্তু কম নয়। গুগলের অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত স্মার্টফোনের কাটতিও বেশ। আর অ্যানড্রয়েডচালিত স্মার্ট আনছে স্যামসাং, এলজি, সনি, আসুসের মতো প্রযুক্তি দুনিয়ার বাঘা সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। শুধু স্যামসাং একাই গত দেড় বছরে বাজারে এনেছে ছয়টি ভিন্ন মডেলের স্মার্টওয়াচ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিসিএস ইনসাইট তাদের সাম্প্রতিক গবেষণা রিপোর্টে জানাচ্ছে, ২০১৪ সালে পৃথিবীজুড়ে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ স্মার্টওয়াচ। ধারণা করা হচ্ছে, ২০১৫ সালে এসে এই সংখ্যা এক লাফে তিন কোটি ৭০ লাখে গিয়ে ঠেকবে। একই সঙ্গে গবেষণায় আভাস দেওয়া হয়েছে, অ্যাপল ওয়াচের দখলেই থাকবে স্মার্টওয়াচের বাজার।urgentPhoto
শুরুর দিকে শুধু ফোনকল, টেক্সট মেসেজ কিংবা মেইলের নোটিফিকেশন জানানোর কাজটুকুই করত স্মার্টওয়াচ। সঙ্গে হয়তো একটু গান শোনা, নেভিগেশনের কাজ এবং নামের সম্মান রাখার জন্য সময় দেখানোর কাজটুকু করত। তবে দিন দিন স্মার্টওয়াচ এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চলেছে। দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা অবলম্বনে চলুন দেখে নেওয়া যাক, কিছু স্মার্টওয়াচের আদ্যোপান্ত।
দ্য পেবল টাইম
স্মার্টওয়াচের দুনিয়ায় একদম নতুন। তবে কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য এই স্মার্টওয়াচকে সবার নজরে এনেছে। পেবল টাইমের স্ক্রিনে ব্যবহার করা হয়েছে ই-পেপার। ফলে খুব সহজেই সব সময় দেখা যাবে এই স্ক্রিনে, আলাদা করে স্ক্রিন চালু করতে হবে না। এর আগে অ্যামাজনের বই পড়ার যন্ত্র কিন্ডলে ব্যবহার করা হয়েছিল এই প্রযুক্তি।
চার্জের দিক থেকে অবশ্য স্মার্টওয়াচ পরিবারে সেরার তকমা দেওয়া যায় পেবল টাইমকে। একবার চার্জ দিলে টানা পাঁচদিন ব্যবহার করা যাবে এটি। আর একটি বড় সুবিধা থাকছে এখানে, আইফোন কিংবা অ্যানড্রয়েড দুপক্ষেই চলবে পেবল ওয়াচ! প্রাথমিকভাবে পেবল ওয়াচের দাম ধরা হয়েছে ১৯৯ ডলার।
অ্যাপল ওয়াচ
স্মার্টওয়াচের দুনিয়ায় সবচেয়ে দামি ওয়াচটির কারিগর যে অ্যাপল, সেটা বোধ হয় বলে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ৫৪৯ ডলার থেকে শুরু হয়েছে অ্যাপল ওয়াচের দাম। রয়েছে কয়কটি সংস্করণ। একটু শৌখিন মানুষের জন্য অ্যাপলের রয়েছে গোল্ডওয়াচ এডিশন! এ জন্য গুনতে হবে ১৫ থেকে ১৭ হাজার ডলার!
আইফোনের অনেক সুবিধাই পাওয়া যাবে এই স্মার্টওয়াচে। সঙ্গে রয়েছে হার্টবিট মাপা, বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুযোগ। তবে চার্জের ব্যবহারে এরই মধ্যে ক্রেতাদের অভিযোগ শোনা গেছে।
এলজি ওয়াচ আরবান
এলজি বাজারে নিয়ে আসছে তাদের প্রথম স্মার্টওয়াচ এলজি ওয়াচ আরবান। গোলাকার, ঝকঝকে এই স্মার্টওয়াচ বেশ স্টাইলিশ। এর স্ক্রিন তৈরি করা হয়েছে ওএলইডি প্রযুক্তিতে। সঙ্গে রয়েছে ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে দূর থেকে স্মার্টফোনের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার সুবিধা। তবে চার্জের ব্যাপারে খুব একটা উন্নতি করতে পারেনি এলজি। একবার পুরো চার্জ দিলে আরবান চলবে মাত্র দেড় দিন।
সনি স্মার্টওয়াচ-৩
চারকোনা এই নতুন স্মার্টওয়াচ বাজারে আনছে সনি। তবে হার্ট রেট মনিটরের মতো বৈশিষ্ট্য যখন সব স্মার্টফোনেই উপস্থিত, তখন সনি এই ফিচার ঝেড়ে ফেলছে। তার বদলে যুক্ত হয়েছে জিপিএস চিপ। এর ফলে স্মার্টফোন ছাড়াই স্মার্টওয়াচ-৩ ব্যবহারকারীর নানা কর্মকাণ্ডের হিসাব রাখতে পারবে। সনি স্মার্টওয়াচ-৩-এ রয়েছে এলসিডি পর্দা। ব্লুটুথের মাধ্যমে এটি যুক্ত হতে পারবে অ্যানড্রয়েডচালিত স্মার্টফোনের সঙ্গে। চার্জের ক্ষেত্রে বেশ ভালোই বলা চলে সনির স্মার্টওয়াচকে। একবার পুরো চার্জ দিলে চলবে প্রায় তিনদিন।