ভারতে নামবে সত্যিকারের রোবোকপ!

Looks like you've blocked notifications!

বিটিভিতে সম্প্রচারিত রোবোকপের কথা মনে আছে? দুর্বৃত্তদের হামলায় মৃতপ্রায় পুলিশ অফিসার অ্যালেক্স মরফির মগজটাই শুধু ছিল জৈবিক, আর শরীরের বাকি অংশ ছিল যান্ত্রিক, অর্থাৎ রোবোটিক। তবে বহুদিন ধরেই মানুষ পূর্ণাঙ্গ রোবোকপ বানানোর চেষ্টা করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভারতের রাস্তায় শিগগিরই দেখা মিলবে রোবোকপ বা পুলিশ রোবটের।

ডিএনএ ইন্ডিয়ার একটি খবরে প্রকাশ, এইচ-বটস রোবোটিক্স প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ভারতীয় কোম্পানি পুলিশ রোবট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছ। নতুন এই রোবট পুলিশ তৈরির পর পরীক্ষামূলকভাবে তা মোতায়েন করা হবে জুবিলে হিলস চেকপোস্টে।

এইচ-বটসের প্রতিষ্ঠাতা কিষাণ এক বিবৃতিতে জানান, রোবটটির নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে রোবটটি হাঁটতে পারবে, মানুষকে চিনতে পারবে, অভিযোগ গ্রহণ করতে পারবে এবং বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে পারবে। একটি অনুষ্ঠানে রোবটটির নকশা উন্মোচন করেছেন তেলেঙ্গানা অঙ্গরাজ্যের আইটি সেক্রেটারি জয়েশ রঞ্জন।

কিষাণ বলেন, ‘দুবাইয়ের পর এটিই হবে পৃথিবীর দ্বিতীয় হিউম্যানয়েড রোবট (মানবাকৃতির রোবট)। দুবাইয়ের রোবটটি তৈরি করে দিয়েছিল ফ্রান্স। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত হতে যাচ্ছে হিউম্যানয়েড রোবট। রোবটটির একটি প্রটোটাইপ (নমুনা) এ বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তৈরি করা হবে। ডিসেম্বরে জুবিলি হিলস চেকপোস্টে রোবটটি দেওয়ার আগে আমরা দুই মাস ধরে প্রটোটাইপটি নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা করব।’

রোবটটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে গিয়ে কিষাণ আরো জানান, আমাদের রোবটটি অবিকল দুবাইয়ের রোবটের করেই তৈরি করা হবে। যেটা চাকার সাহায্যে চলতে পারবে, হাঁটতে পারবে, মানুষকে চিনতে পারবে, অভিযোগ গ্রহণ করতে পারবে এবং বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে পারবে।

কিষাণ আরো বলেন, ‘আমাদের ১০টি করে রোবট তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। এ ধরনের রোবটকে আপনি ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন অথবা বড় কোনো হোটেল, হাসপাতাল, অফিসের সুরক্ষায় এ ধরনের রোবটকে ব্যবহার করা যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এক বছরে ১০টি রোবট তৈরি করতে সক্ষম এবং প্রতিটি রোবটের তিন লাখ রুপি দাম ধরে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’

এদিকে রোবটটির নকশাকারক জয়েশ রঞ্জন জানিয়েছেন যে রাজ্য সরকার অতিদ্রুত আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) পলিসি গ্রহণ করবে। আর তারা পলিসি গ্রহণ করলেই রোবটটির সঙ্গে আইওসি জুড়ে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে তেলেঙ্গানা রাজ্যের একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে পলিসি নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছি। মূলত আটটি বিভাগে আইওসি পলিসি কাজ করবে। স্টার্টআপস, অ্যানিমেশন ইন্ডাস্ট্রি, সাইবার সিকিউরিটিসহ পলিসির আটটি বিভাগ একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিন থেকে চার মাসের মধ্যে তেলেঙ্গানা রাজ্যের জন্য আমরা আইওটি পলিসি ঘোষণা করব। পলিসির খসড়া শেষ প্রায় পর্যায়ে রয়েছে।’

টি-ওয়ার্কস ও টি-হাভ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান রোবটটির জন্য সেমিকন্ডাকটার এবং হার্ডওয়্যারের মতো যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে। সেখানে থেকেই তেলেঙ্গানার গাছিবৌলি এলাকায় আসবে রোবটগুলোর যন্ত্রাংশ। এ ছাড়া পরবর্তী তিন থেকে চার মাসের জন্য ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগও করেছে এ দুটি প্রতিষ্ঠান।