‘পিতৃত্বকালীন’ ছুটিতে মার্ক জাকারবার্গ
ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী এবং সহপ্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ এক ফেসবুক পোস্টে প্রথমবারের মতো বাবা হতে যাওয়ার উত্তেজনার কথা সবার কাছে প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, দুই মাসের ‘পিতৃত্বকালীন’ ছুটি নিতে যাচ্ছেন নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে। আর কিছুদিন পরই জাকারবার্গের সহধর্মিণী প্রিসিলা চ্যান একজন কন্যাসন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন।
ফেসবুক পোস্টে জাকারবার্গ লেখেন, ‘কর্মজীবী পিতা-মাতারা যদি নবজাতকদের পাশে থাকার জন্য সময় দেন, তাহলে বাচ্চাদের জন্য এবং পরিবারের জন্য তার ফলাফল সব সময়ই ইতিবাচক হয়।’
জাকারবার্গ আরো লিখেছেন, ‘ফেসবুক প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তার জন্য আমরা চার মাসের বেতনসহ মাতৃত্বকালীন ও পিতৃত্বকালীন ছুটি বরাদ্দ রাখি। কেউ চাইলে একসঙ্গে কিংবা তাঁর সন্তান জন্মের প্রথম এক বছরের যেকোনো সময় এই ছুটি গ্রহণ করতে পারেন।’
এমনিতে ব্যাপারটি খুব সাধারণ দেখালেও জাকারবার্গের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের চাকরি বাজারে খুব একটি সাধারণ ঘটনা নয়। এর পেছনে অবশ্য কারণও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মকর্তাদের পিতৃত্বকালীন ছুটির সঙ্গে বেতন প্রদান করে এবং এই হিসাব এক দশক ধরে প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে। এ ছাড়া অনেকে ভাবে, চাকরিতে ছুটি নিলে হয়তো সে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে যাবে কিংবা পদোন্নতি পেতে সমস্যা হতে পারে। তবে ভাবনাগুলো যে একদম অমূলক, তাও না!
যদিও এ রকম কোনো তথ্য কিংবা উপাত্ত সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী পিতৃত্বকালীন ছুটি গ্রহণ করাটা একেবারেই দুর্লভ ঘটনা।
এ বছর সিলিকন ভ্যালি কিংবা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পিতৃত্বকালীন ছুটি খুবই আলোচিত একটি বিষয় ছিল। শুরুটি হয়েছিল নেটফ্লিক্সের মাধ্যমে, যখন তারা কর্মকর্তাদের জন্য ‘আনলিমিটেড’ পিতৃত্বকালীন ছুটি ঘোষণা দেয়।
দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবে উন্নত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রতেই পিতৃত্বকালীন ছুটিতে বেতন প্রদান করা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। তবে মার্ক জাকারবার্গের এই ছুটি গ্রহণ এবং ফেসবুকের কর্মকর্তাদের জন্য এই সুবিধা নিশ্চিত করার ঘটনাটি একটি মাইলফলক হতে পারে বর্তমান পরিস্থিতিতে।