সুখ-দুঃখের সঙ্গে আয়ুর সম্পর্ক নেই!
দুঃখ মানুষের মধ্যে অসুখের মতো কাজ করে এবং আয়ু কমায়—এমন কথা অন্তত নারীদের ক্ষেত্রে ভুল। সুখ বা দুঃখের সঙ্গে নারীর জীবনকালের কোনো সরাসরি সম্পর্ক নেই। নারীদের ক্ষেত্রে সুখ যেমন জীবনকালে বাড়তি কোনো সময় যুক্ত করে না, তেমনি দুঃখও জীবনকাল কমিয়ে দেয় না। এমন দাবি করেছেন যুক্তরাজ্যের গবেষকরা।
যুক্তরাজ্যের সাত লাখ নারীর ওপর দীর্ঘ ১০ বছর গবেষণা চালান যুক্তরাজ্যের গবেষকরা। এই নারীদের গড় বয়স ছিল ৫৯। আর গবেষণা চলাকালীনই ৩০ হাজার নারীর মৃত্যু হয়। ওই গবেষণায় নেতৃত্ব দেন অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের গবেষক বেটি লিউ। আর এই সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী দ্য ল্যনসেট।
গবেষণায় অংশ নেওয়া নারীদের কাছে কিছু প্রশ্ন করা হয়। এসব প্রশ্নের মাধ্যমে তাঁদের স্বাস্থ্যের অবস্থা, সুখ, মানসিক চাপ, নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্রাম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সমীক্ষাভিত্তিক গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রতি ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনই বলেন, তাঁরা সাধারণত সুখেই থাকেন।
গবেষণায় আরো দেখা যায়, ধূমপান, কোনো কিছু না পাওয়ার বেদনা, প্রয়োজনীয় শরীরচর্চা না করা, সঙ্গীহীন থাকা ইত্যাদি কারণে নারীরা অসুখী হয়। কোনা দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত নারীরা এরই মধ্যে অসুখী হয়। এ ছাড়া তাঁদের মধ্যে মানসিক চাপ ও নিয়ন্ত্রণহীনতা দেখা যায়।
গবেষকরা বলেন, সুখী বা অসুখী যাই হোক না কেন সেই অবস্থা কোনো নারীর আয়ুর ওপর প্রভাব ফেলেনি। যাঁরা নিজেদের সুখী বলেছে তাঁদের গড় আয়ুর সঙ্গে অসুখী বলা নারীদের গড় আয়ুর কোনো পার্থক্য নেই।
গবেষক বেটি লিউ বলেন, অসুস্থতা মানুষকে অসুখী করে। কিন্তু দুঃখ মানুষকে অসুস্থ করে না। সুখ বা দুঃখের সঙ্গে মানুষের জীবনকালের কোনো সরাসরি সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাজ্যের গবেষকদের মতে, সুখ বা দুঃখ নারীদের জীবনকালের ওপর কোনো প্রভাব না ফেললেও গুরুতর রোগে আক্রান্ত নারীরা অসুখী হন।