কল্পনার প্রযুক্তি যখন বাস্তবে

Looks like you've blocked notifications!

মানুষ কল্পনাপ্রবণ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের মানুষের কল্পনার প্রকাশ ঘটে হলিউড চলচ্চিত্রে। গত শতাব্দীর ৬০-এর দশক থেকে হলিউডের অনেক চলচ্চিত্রে বিভিন্ন কাল্পনিক প্রযুক্তির কথা বলা হয়। কাল্পনিক এসব প্রযুক্তির অনেকগুলোই এখন বাস্তবেই দেখা যায়। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ‘টেলিগ্রাফে’র প্রতিবেদন থেকে এমন ১০টি প্রযুক্তির কথা তুলে ধরা হলো। 

১৯৭৭ সালে ‘স্টার ওয়ারস’ চলচ্চিত্রের ষষ্ঠ পর্বে দেখানো এর একটি চরিত্র ‘প্রিন্সেস লিয়া’ সহায়তা চেয়ে ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছে। বার্তাটি ছিল ত্রিমাত্রিক। লিয়া ডিসপ্লে সিস্টেম এই ত্রিমাত্রিক প্রদর্শন ব্যবস্থাকে বাস্তবের রূপ দিয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে অনেক প্রদর্শনী বা কনসার্টে ত্রিমাত্রিক ডিসপ্লেতে ভিডিও বা ছবি প্রদর্শন করা হয়। 
‘স্টার ট্রেক’ চলচ্চিত্রে দেখানো হয় তারহীন যোগাযোগ ব্যবস্থা, যেখানে একটি যন্ত্রে কোনো বস্তু বা ব্যক্তিকে রাখা হলে দূর মহাকাশের কোনো স্থানে রাখা অপর যন্ত্রে ওই বস্তু বা ব্যক্তির প্রতিরূপ সৃষ্টি হয়। এই প্রযুক্তির বাস্তব রূপ হলো ত্রিমাত্রিক বা থ্রিডি প্রিন্টিং। পৃথিবীর কোনো প্রান্তে থাকা একটি ত্রিমাত্রিক প্রিন্টারে বস্তু রেখে তা স্ক্যান করে এর তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবী বা মহাকাশে পাঠানো যায়। আর প্রেরিতস্থানে থাকা অপর একটি থ্রিডি প্রিন্টারে বস্তুটি প্রিন্ট করে নেওয়া যায়। তবে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টারে মানুষ পাঠানোর বিষয়টি এখনো সম্ভব হয়নি। 
১৯৮৯ সালের চলচ্চিত্র ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’-এর দ্বিতীয় পর্বে দেখানো ২০১৫ সালের বিশ্ব। কল্পনার ২০১৫তে দেখানো হয় কিছু বিস্ময়কর প্রযুক্তি, যার একটি ছিল ভাসমান ‘হোভারবোর্ড’। মজার বিষয় হলো গত বছরই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লেক্সাস এমন হোভারবোর্ডের নমুনা দেখিয়েছে।
 পরিচালক স্টিফেন স্পিলবার্গের ২০০২ সালের চলচ্চিত্র ‘মাইনরিটি রিপোর্ট’। ওই চলচ্চিত্রে দেখানো হয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ সংগঠনের আগেই সম্ভাব্য অপরাধীকে ধরে ফেলা। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে এমন প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে। তাই বলা যায় এমন প্রযুক্তি আর দূরে নয়। 
‘টোটাল রিকল’ চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছিল রোবট চালিত গাড়ি। বর্তমানে গুগল এনেছে রোবট ছাড়াই স্বনিয়ন্ত্রিত গাড়ি। তবে এই গাড়ি এখনো মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। এখনো এমন গাড়ি নিয়ে গবেষণা চলছে। 
‘টার্মিনেটর’ চলচ্চিত্রের ভয়ঙ্কর রোবট দেখানো হয়, যা ভবিষ্যৎ থেকে নির্দিষ্ট ব্যক্তির পেছনে ছোটে এবং তাঁকে হত্যা করে। এমনই রোবট তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বোস্টন ডাইনামিক্স। কয়েকটি রোবটকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক গবেষণাগারেও পাঠানো হয়েছে। 
‘ওয়াল-ই’ নামক অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছিল পরিচ্ছন্নতা রোবট। পরিচ্ছন্নতায় সহায়তা করবে এমন রোবট বানিয়েছে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভলভো। 
বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘ব্লেড রানারে’ দেখানো এমন রোবট, যার সঙ্গে মানুষের কোনো পার্থক্য করা যায়। এমন রোবটকে শুধু পরীক্ষার মাধ্যমেই আলাদা করা যায়। প্রায় মানুষের মতোই দেখতে রোবট বানিয়েছে ট্রু কম্পিনিয়ন নামক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। তবে একে সহজেই মানুষ থেকে আলাদা করা যায়।  
১৯৬৫ সালের ‘থান্ডারবল’ চলচ্চিত্রে জেমস বন্ড (শন কনোরি) জেটপ্যাক ব্যবহার করেন। ২০০৮ সালে জেটপ্যাক প্রযুক্তিকে বাস্তবের রূপ দেয় নিউজিল্যান্ডের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মার্টিন জেটপ্যাক। যা পড়ে আকাশে ৩০ মিনিট পর্যন্ত ওড়া সম্ভব। গত বছরই দুবাইয়ে এই জেটপ্যাকের উন্নত সংস্করণ দেখানো হয়েছে। 
২০১৪ সালে অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র ‘হার’ যেখানে অভিনেতা জোয়াকিন ফনিক্সের প্রেম হয় পরবর্তী প্রজন্মের ব্যক্তিগত সহকারীর সঙ্গে। ওই ব্যক্তিগত সহকারীর কোনো বাস্তব রূপ নেই, যা ইন্টারনেটভিত্তিক শক্তিশালী সফটওয়্যার মাত্র। মাইক্রোসফট, অ্যাপল ও ফেসবুক এরই মধ্যে এমন ব্যক্তিগত সহকারী এনেছে।