ইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় করার ১০ কৌশল

Looks like you've blocked notifications!

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। বর্তমানে অনেকেই শখের বসে ইউটিউব চ্যানেল খুলে বসেন আবার কেউবা পেশা বদল করে ইউটিউবকেই উপার্জনের উৎস হিসেবে গ্রহণ করেন। ইউটিউবকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার মূল কারণ হচ্ছে নিজের ইচ্ছে মতো  কাজ করার পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করা যায় এসব সুবিধার কথা চিন্তা করে আজকাল অনেক মানুষ ইউটিউবকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করছে এবং সফল হচ্ছে। আর অন্যদের এই সাফল্য দেখে অনেকেই ইউটিউব চ্যানেল খুলে বসেন। আর ভেবে বসেন এখন শুধু সফল হওয়ার পালা। কিন্তু ইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় করা এত সহজ নয়। অনেক ইউটিউবার আছেন যারা অনেক উৎসাহ নিয়ে চ্যানেল  খুলে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন আর এর মূল কারণ ইউটিউব চ্যানেল জনপ্রিয় না হওয়া। হতাশ হয়ে তারা শেষ পর্যন্ত ইউটিউব চ্যানেলটি বন্ধ করে দেন। এমন মানুষ খুবই কম আছেন যারা নিজের ইউটিউব চ্যালেনটি জনপ্রিয় করার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করেন। অবশ্য এমন অনেক ইউটিউবার আছেন যাদের কনটেন্ট ভালো হওয়া সত্ত্বেও ইউটিউব চ্যানেলটি জনপ্রিয় হচ্ছে না। ইউটিউবে সাফল্য পাওয়ার জন্য আপনাকে পরিশ্রম করার পাশাপাশি ধৈর্য ধারণ করতেই হবে। আজকে আপনাদের এমন ১০টি টিপস দেওয়া চেষ্টা করবো যেগুলো ব্যবহার করে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি জনপ্রিয় করে তুলতে পারবেন।

১.আপনার দক্ষতার বিষয় নিয়ে কাজ করুন

অধিকাংশ মানুষ ইউটিউবে আসেন অন্যের সাফল্য দেখে। একজন ইউটিউবার হয়তো প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে সফল হয়েছেন তা দেখে আপনিও প্রযুক্তি বিষয়ক চ্যানেল খুলে বসলেন। কিন্তু প্রযুক্তি নিয়ে কোনোকালেই আপনার আগ্রহ ছিল না এবং এ বিষয়ে আপনার ধারণা কম। এক্ষেত্রে কিন্তু আপনার চ্যানেলটি জনপ্রিয় হবে না। কারণ আপনি বিষয়টি নিয়ে ভিডিও তৈরি করার মতো কনটেন্ট  পাবেন না। আপনি এমন বিষয় নিয়ে কাজ করুন যে বিষয়ে আপনি সেরা। একটি বিষয়ে যদি আপনার দক্ষতা থাকে তাহলে ঐ বিষয়ে আপনি প্রচুর কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন। ধরা যাক, আপনি ভালো গান গাইতে পারেন কিংবা বাগান তৈরির ব্যাপারে আপনার ভালো দক্ষতা রয়েছে। আপনি এই বিষয়গুলো নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন। অন্যকে নকল না করে নিজের দক্ষতার বিষয় নিয়ে  কাজ করলে সহজেই সাফল্য লাভ করবেন।

২.আকর্ষণীয় শিরোনাম বা টাইটেল ব্যবহার করুন

ইউটিউব ভিডিওতে টাইটেল বা শিরোনাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টাইটেল আকর্ষণীয় না হওয়ার কারণে অনেক চ্যানেল জনপ্রিয় হতে পারে না। আপনি কি ধরণের ভিডিও তৈরি করেন তা টাইটেল দেখে বোঝা সম্ভব। তবে্ অবশ্যই ভিডিওর সাথে প্রাসঙ্গিক  টাইটেল ব্যবহার করবেন। আপনার ভিডিওর টাইটেল ক্লিক বাইট হিসেবে কাজ করবে এমন আকর্ষণীয় টাইটেল তৈরি করুন যাতে মানুষ এর প্রতি আকৃষ্ট হয়।

৩.আকর্ষণীয় থাম্বনেল ব্যবহার করুন

একটি ইউটিউব চ্যানেলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে থাম্বনেল। একজন দর্শক যখন ইউটিউবে কিছু সার্চ করে তখন ইউটিউব তার সামনে অনেক ভিডিও নিয়ে আসে আর সেখানে ইউটিউব  আপনার ভিডিও দর্শকের সামনে উপস্থাপন করতে পারে। আর সেজন্য আকর্ষণীয় থাম্বনেল ব্যবহার করা জরুরি। অধিকাংশ মানুষ থাম্বনেল দেখেই ভিডিওতে ক্লিক করে থাকে। আকর্ষণীয় থাম্বনেল তৈরি করার জন্য গুগোল প্লে-স্টোরে প্রচুর  ফ্রি অ্যাপ রয়েছে যাদের ব্যবহার করে আপনি সহজেই নজরকাড়া থাম্বনেল তৈরি করতে পারবেন।

৪.সঠিক ট্যাগ বা কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করুন

আকর্ষণীয় টাইটেল আর নজরকাড়া থাম্বনেল ব্যবহার করেছেন এখন সঠিক ট্যাগ বা কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করাও জরুরি। নির্দিষ্ট বিষয় বা ব্যক্তির ভিডিও বের করার জন্য ইউটিউবের আলাদা সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে  আর ইউটিউবে প্রচুর প্রতিযোগিতাও রয়েছে। তাই নিজের চ্যানেলকে এগিয়ে রাখার জন্য ভিডিওর টাইটেলে বা বর্ণনায় দর্শকদের বেশি খোজ করা শব্দ বা কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করুন। অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা আপনাকে জনপ্রিয় ট্যাগ খুজে বের করতে সহায়তা করবে। এমন একটি ওয়েবসাইট হল keyword Tool.

৫.দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখার কৌশল অবলম্বন করুন

নতুন হোক বা পুরোনো সকল ইউটিউবারদের প্রধান সমস্যা দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখা। আপনার কনটেন্ট ভালো,ভিডিও শেয়ার হচ্ছে, মানুষ লাইক, কমেন্ট করছে কিন্তু পুরো ভিডিও কেউ দেখছে না। এটা আপনার চ্যানেলের জন্য বড় সমস্যা। কারণ দর্শকরা আপনার ভিডিও পুরো না দেখলে আপনার টাকা আয় হবে না। তাই দর্শকের মনোযোগ ধরে রেখে চ্যানেলের ওয়াচ টাইম বাড়ানো চেষ্টা করতে হবে। আর ওয়াচ টাইম বাড়ানোর একমাত্র উপায় দর্শক। তাই দর্শকদের সাথে বেশি করে যোগাযোগ করুন। তাদের আপনার পুরো ভিডিও দেখার অনুরোধ করুন কিংবা সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়টি ভিডিাওর শেষদিকে রাখুন।

৬. ভিডিওতে লাইক ও কমেন্ট বাড়ানোর চেষ্টা করুন

ভিডিওতে লাইক ও কমেন্ট বাড়ানোর প্রধান মাধ্যম হচ্ছে দর্শক। তাই এক্ষেত্রেও দর্শকদের  সাথে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। চ্যানেলের জনপ্রিয়তা বাড়ানো জন্য দর্শকদের কথা বলুন। এছাড়া দশর্কদের কাছে  জানতে চান তারা কোন বিষয়ের উপর ভিডিও দেখতে চায়, আপনার কাজ সম্পর্কে তাদের মতামত দিতে বলুন,চ্যানেলে পোল তৈরি করুন। এই কাজগুলো দর্শকের সাথে একটি সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করবে যা আপনার চ্যানেলকে জনপ্রিয় করবে।

৭. ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন

ইউটিউব চ্যানেলকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি। আপনি একটি ভিডিও আপলোড করে ১ মাস আর কোনো ভিডিও আপলোড করলেন না । আপনার দর্শকরা  এতে বিরক্তবোধ করবে এবং চ্যানেলে দর্শকসংখ্যা কমে যাবে। তাই নিজের কাজের ধারাবাহিকতা  বজায় রাখার চেষ্টা করুন। যদি আপনি সপ্তাহে একটি ভিডিও আপলোড করেন তাহলে চেষ্টা করুন প্রতি সপ্তাহে একই দিনে একই সময়ে ভিডিও আপলোড করার তাহলে আপনার কাজের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

৮. আকর্ষণীয় কনটেন্ট ব্যবহার করুন

আপনি যে ভিডিও তৈরি করেন তার কনটেন্ট বা বিষয়বস্তুই আসল। আপনি যতই সুন্দর ভিডিও তৈরি করুন , গান ব্যবহার করুন ,চমৎকার এডিটিং করুন যদি ভিডিওর কনটেন্ট ভালো না হয় তাহলে মানুষ সেটা দেখবে না। আপনি কিভাবে আপনার কনটেন্ট দশর্কদের সামনে তুলে ধরছেন এটাই আসল। যে বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি করছেন তাতে সঠিক এবং  নির্ভুল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

৯. অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্য নিন

নিজের ইউটিউব চ্যানেলটি অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করুন। এক্ষেত্রে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউট খুলুন আর তাতে নিজের ‌ইউটিউব চ্যানেলের প্রচার করুন।

১০.ট্রেন্ডি টপিকের উপর ভিডিও তৈরি করুন

নিজের চ্যানেলটিকে জনপ্র্রিয় করার জন্য গুগোল ট্রেন্ডের সাহায্য নিতে পারেন। গুগোল ট্রেন্ডের সাহায্য আপনি সহজেই জানতে পারবেন এখন কোন বিষয়গুলো  জনপ্রিয়। এছাড়াও কোনো দেশে কোন টপিক বেশি জনপ্রিয় সেটা জেনে ভিডিও তৈরি করে  সহজেই দশর্কদের আকৃষ্ট করতে পারবেন।

সূত্র: ওয়েবফ্রেন্ডলি.কম