অতিথি পাখির রাজ্যে

Looks like you've blocked notifications!

ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ছে দিগন্তের নীলে। কখনো চুপচাপ ঝিলের জলে, কখনো বা এক হয়ে আকাশ মাতিয়ে বেড়াচ্ছে শীতের অতিথিরা। এ দৃশ্যই জানান দিচ্ছে, অতিথি পাখির বিচরণে এখন মুখর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

অতিথি পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে ঘুম ভাঙে সবার। বলা চলে, শীতে অতিথি পাখির সঙ্গে বসবাসের দুর্লভ সুযোগ মেলে শিক্ষার্থী তথা ক্যাম্পাসবাসীর। রক্তকমল শাপলার মাঝে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা রকমারি প্রজাতির পাখির মেতে ওঠা যেন হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এক অনন্য দৃশ্য।

পাখির আগমনে লাল শাপলার চাদরে ঢাকা লেকগুলো হয়ে ওঠে অপরূপ। পাখির কলতান ও শীতের স্নিগ্ধ আমেজ প্রকৃতিপ্রেমীদের করে তুলছে প্রাণচঞ্চল। একে অপরের সঙ্গে খুনসুটিতে মেতে ওঠা দৃশ্য বাড়তি আনন্দের জোগান দিচ্ছে সব বয়সীকে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব পাখি আসে, তার মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতারি অন্যতম। এ ছাড়া অন্য প্রজাতির পাখির মধ্যে আছে মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি ইত্যাদি।

শহরের ব্যস্ত জীবনের যান্ত্রিকতা ও ধুলোবালি থেকে মুক্ত এই সবুজ ক্যাম্পাস। হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলি, জলকেলি, পুরো ক্যাম্পাসের আকাশে মনের সুখে দলবেঁধে উড়ে বেড়ানোর সৌন্দর্য নিজ চোখে না দেখলে বোঝা যাবে না।

প্রকৃতির বিরল এই দৃশ্য দেখার জন্য প্রতিদিন শত শত দেশি-বিদেশি পাখিপ্রেমী ভিড় জমান এই ক্যাম্পাসে। কেউ আসেন দলবেঁধে, কেউ বা আসেন সপরিবারে। অতিথি পাখির বাহারি রূপের মেলায় আপনিও সময় করে ঘুরে আসতে পারেন আর হারিয়ে যেতে পারেন কিছুক্ষণের জন্য। উপভোগ করতে পারেন রক্তকমল শাপলাশোভিত লেকের মাঝে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেড়াতে আসা অতিথি পাখিদের কোমল ছোঁয়া।

শুক্র ও শনিবার ক্যাম্পাস বন্ধ থাকে। এই দুদিন ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত সময়। এ সময় অতিথিদের বেশি ভিড় লক্ষ করা যায়। ক্যাম্পাস ঘুরে বেড়ানোর জন্য রয়েছে ভ্যান ও রিকশা। ভ্যানে একসঙ্গে প্রায় ছয়জন বসা যায়।

খাবার

বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা নামক স্থান হরেক রকম ভর্তা ও মুখরোচক খাবারের জন্য সুপরিচিত। সুলভ মূল্যে এসব খাবার পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে বসে শীতের পিঠার বাহার।

যেভাবে যাবেন

রাজধানী থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পশ্চিমে অবস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকার প্রায় সব স্থান থেকেই সেখানে যাওয়ার জন্য বাস সার্ভিস রয়েছে। মিরপুর-১০ থেকে (ইতিহাস ও রাজধানী) ৩৫ টাকা, মতিঝিল থেকে (ওয়েলকাম) ৫০ টাকা, মালিবাগ থেকে (লাব্বাইক) ৫০ টাকা, গুলশান থেকে (অগ্রদূত) ৫০ টাকা, আবদুল্লাহপুর থেকে নবীনগর হয়ে ক্যাম্পাসে আসারও বাস সার্ভিস রয়েছে।