গুলিয়াখালী সৈকতে একদিন

Looks like you've blocked notifications!

বিশাল মাঠের দুই পাশে কেওড়াবাগান দিয়ে ঘেরা। সামনে বিশাল সৈকত। প্রকৃতির এক অপূর্ব জায়গা। প্রথমে দেখলেই মনে হবে এটি সুন্দরবনের কোনও দৃশ্য। কিন্তু তা নয়; এটি গুলিয়াখালী সৈকত।

একটি ইভেন্টের মাধ্যমে আমরা গিয়েছিলাম দুজন। এই ইভেন্টে আমরা ছিলাম মোট ৪৬ জন। বৃহস্পতিবারের দিন রাত ১২টায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে আমরা রওনা দিই সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে। ভোর সাড়ে ৬টায় আমরা পৌঁছে যাই সীতাকুণ্ডে। আমাদের বাসটি যেহেতু ভাড়া করা ছিল, এ জন্য আমরা সীতাকুণ্ড বাজারে নেমে যাই। আগে থেকে ঠিক করা ছিল হোটেল। সেখানে আমরা ফ্রেশ হয়ে সকালের নাশতা করি। এর পর আমরা অটোয় চড়ে প্রথমে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাই। সাড়ে ১১টার দিকে পাহাড় থেকে নেমে আমরা সবাই আবারও অটো করে গুলিয়াখালী সৈকতের দিকে রওনা দিই।

বেলা যখন ১২টা, তখন আমরা সৈকতে পৌঁছে যাই। এর পর ৩০ টাকা দিয়ে একটি ট্রলারে উঠলাম। ট্রলারে ওঠার অসাধারণ অনুভূতি ছিল। ট্রলারে ওঠার পর মনে হচ্ছিল আমরা সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। কেননা সুন্দরবন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার কয়েক বার ছিল। জোয়ারের সময় সাগরের ঢেউ ট্রলারে আছড়ে পড়ার দৃশ্য ছিল আরও মনোরম। তখনকার মজা ছিল অন্য রকমের অনুভূতি।

ট্রলার থেকে নেমে আমরা কিছু ছবি তুলি। এর পর আমাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগগুলো একটি নিরাপদ জায়গায় রেখে নেমে যাই সমুদ্রে। গুলিয়াখালীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় জিনিস হলো কেওড়াবনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারপাশে কেওড়াগাছের শ্বাসমূল এবং বিভিন্ন জায়গায় গর্ত। এক একটা গর্তের সামনে গেলে মনে হবে, এই যেন একটা সাপ বা লতা আমাকে আঁকড়ে ধরবে। অনেক সময় অতিবাহিত করলাম। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় অনেক মানুষ বেড়াতে আসে।

আমরা সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা অতিবাহিত করে ফিরে আসি সীতাকুণ্ডের সেই হোটেলে। সেখানে দুপুরের খাবার শেষ করে একটু বিশ্রাম নিই। এর পর আমরা বাসে করে চলে যাই সহস্রধারা ঝর্ণার উদ্দেশে। আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে থাকার পরে চলে আসি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আমরা বাসে করে ঢাকা চলে আসি। এ ভাবেই এক দিনের একটা রোমাঞ্চকর ভ্রমণ করে এলাম সীতাকুণ্ড থেকে।

থাকা ও খাওয়া

এক দিনে যেহেতু ঘোরা সম্ভব, সে ক্ষেত্রে থাকার জন্য কোনও আবাসিক হোটেলের দরকার হবে না। এ ছাড়া খাওয়ার জন্য সীতাকুণ্ডে কয়েকটি জনপ্রিয় হোটেল রয়েছে। সেখানে ভালো মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। তা ছাড়া থাকার জন্য সীতাকুণ্ডে বেশ কিছু আবাসিক হোটেলও পাওয়া যায়।

পার্শ্ববর্তী দর্শনীয় স্থান

গুলিয়াখালী সৈকতে গেলে একই দিনে চন্দ্রনাথ পাহাড়, সহস্রধারা লেক ও ঝর্ণা এবং মহাময়া ঝর্ণা, বাঁশবাড়িয়া সৈকত দেখা যাবে।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সায়েদাবাদে যে কোনও বাসে করে সীতাকুণ্ড বাসস্টেশনে নামতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভাড়া ৪৮০ টাকা। এই দর্শনীয় স্থান ট্রেন (লোকাল ও মেইল) ভ্রমণ করেও যাওয়া যায়। সীতাকুণ্ড থেকে অটোরিকশায় পশ্চিমে গুলিয়াখালী যেতে ২০ টাকা ভাড়া।