ফাল্গুনী হাওয়ায় বেদুঈন-এর সঙ্গে ঘুরে আসুন সাজেক

Looks like you've blocked notifications!

হাড় কাঁপানো শীতের তীব্রতা কাটিয়ে ফাগুনের কুসুম কুসুম শীতল পরিবেশে বসন্তের আগমন। কচি পাতার নিমন্ত্রণ আর পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার আহ্বান জানিয়ে ডাকছে পাহাড়। এ ডাকে সাড়া দিয়ে ভ্রমণ করে আসতে পারেন অপরূপ সাজেক। আর সেইসঙ্গে খাগড়াছড়ির প্রকৃতির আভাস। আপনার এই পথে মনোমুগ্ধকর আয়োজন চাইলে নিশ্চিন্তে ঘুরে আসতে পারেন বেদুঈনের সঙ্গে।

এখন স্বর্গীয় রূপ ধারণ করেছে সাজেক। গাছে গাছে ডাকছে কোকিলসহ বিভিন্ন পাখপাখালি। ভোরে তাদের মিষ্টি সুর আর গানে ভাঙবে ঘুম। কুয়াশার রাজ্যে হারিয়ে যাওয়া সূর্য উঁকি দেবে রুপালি আলোয়। সবুজ বৃক্ষে গজাচ্ছে নতুন কুঁড়ি। আর চারপাশে পলাশ, কৃষ্ণচূড়ায় বাহারি যৌবন। তাই আর দেরি না করে বন্ধুবান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে বেদুঈনের সঙ্গে ঘুরে আসুন মনোমুগ্ধকর সাজেক ভ্যালি। আর সেইসঙ্গে ফেরার পথে খাগড়াছড়ির সবুজ ছোঁয়া।

বেদুঈনের ট্যুর

ভ্রমণ শুরু : ৫ মার্চ রাত ১১টা।

ভ্রমণ শেষ : ৮ মার্চ সকাল ৬টা।

যাত্রার দিন রাত ৯টায় গাবতলী থেকে কল্যাণপুর, কলাবাগান, কমলাপুর, সায়েদাবাদ কাউন্টার থেকে বাসে করে খাগড়াছড়ির উদ্দেশে যাত্রা।

ট্যুর খরচ

জনপ্রতি চার হাজার ৮০০ টাকা মাত্র (এক রুমে চারজন শেয়ারিং)।

জনপ্রতি ছয় হাজার ৯৯৯ টাকা মাত্র (এক রুমে দুজন/কাপল)।

যা যা থাকছে বেদুঈনের ট্যুরে

ইকো রিসোর্ট, নন-এসি হিনোবাস, ঐতিহ্যবাহী খাবার, বারবিকিউ নাইট, পাহাড়ি মুরগির রসনাবিলাস, দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়ানো, প্রবেশ ফি, রিজার্ভ জিপ, সুদক্ষ ও সদালাপী গাইড, একটি আকর্ষণীয় বেদুঈনের টি-শার্ট।

যোগাযোগ

মোবাইল নম্বর : ০১৩০৭-৪০৩ ৯৩৩, ০১৬৮৩-৮০০৭৮০

বেদুঈনের ট্যুর প্যাকেজের সেবা

ঢাকা-খাগড়াছড়ি-ঢাকা নন এসিবাস টিকেট, ইকো রিসোর্টে সাজেকে একরাত যাপন, ছয় বেলা মূল খাবার, বিকেলের নাশতা, একবেলা খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী খাবার, দুদিনের জন্য সার্বক্ষণিক রিজার্ভ জিপ (১২ থেকে ১৩ জন শেয়ারিং), সব প্রবেশমূল্য, উল্লেখিত সব দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ।

দর্শনীয় স্থান

১. সাজেক

কংলাক পাড়া/পাহাড় : সাজেকের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের একটি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর পাড়া। সাজেক থেকে জিপে করে পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে ট্র্যাকিং করে পাহাড়ে উঠতে হয়। সেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অনুভূতি চোখ জুড়ানো।

স্টোন গার্ডেন : এটি পাহাড়ের কোলে একটি পাথরের বাগান। এখানে বেশ কিছু পাথর ও পাথরের একটি সেতু সংরক্ষিত আছে।

হেলিপ্যাড : সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত হেলিপ্যাড। এখান থেকে মেঘের সমুদ্র, রাতে জোছনার মিতালি আর তারার মেলা স্পষ্ট দেখা যায়।

২. খাগড়াছড়ি

আলুটিলা : স্বচ্ছ জলধারা সমৃদ্ধ একমাত্র পাথুরে গুহা।

রিসাং ঝর্ণা : পাহাড়ি ঝর্ণায় যাওয়া একটু কষ্টসাপেক্ষ।

জেলা পরিষদ পার্ক : জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত এ পার্কে আছে ঝুলন্ত ব্রিজ, নয়নাভিরাম লেক, পানির ফোয়ারা ও রেস্তোরাঁ।

খাবার মেন্যু

প্রথম দিন

সকালের নাশতা : থাকছে পরোটা/ভুনা খিচুড়ি, ডিম, সবজি, ডাল, চা, মিনারেল ওয়াটার।

দুপুরের খাবার : সাদা ভাত, ব্যাম্বু চিকেন, আলুভর্তা, সবজি, ডাল, সালাদ, মিনারেল ওয়াটার।

বিকেলের নাশতা : শিঙাড়া, পেঁয়াজু, বিস্কুট ও চা।

রাতের খাবার : পরোটা, চিকেন বারবিকিউ, ডাল, সালাদ, সস, সফট ড্রিংকস, মিনারেল ওয়াটার।

দ্বিতীয় দিন

সকালের নাশতা : খিচুড়ি/পরোটা, ডিম, ডিম ভুনা, ডাল, সবজি, মিনারেল ওয়াটার।

দুপুরের খাবার : সাদা ভাত, রুই মাছ/গরুর মাংস/দেশি মুরগি/হাঁসের মাংস, ভাজি, ভর্তা, ডাল, সালাদ, মিনারেল ওয়াটার।

রাতের খাবার : সাদা ভাত, দেশি মুরগি/গরুর মাংস/ হাঁসের মাংস, ভাজি, ভর্তা, ডাল, সালাদ, মিনারেল ওয়াটার।

ভ্রমণ বিস্তারিত

প্রথম দিন : সকালে খাগড়াছড়ি পৌঁছে রেস্তোরাঁয় হাত-মুখ ধুয়ে নাশতা সেরে জিপে করে সাজেকের উদ্দেশে রওনা। সাজেকে পৌঁছে দুপুরের খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম। দুপুর ৩টার পর কংলাক পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়া। সূর্যাস্ত দেখে রিসোর্টে ফেরা। রাতের খাবার সেরে হেলিপ্যাডে ঘুরে এসে সাজেকেই রাত্রিযাপন।

দ্বিতীয় দিন : ভোরে ঘুম থেকে উঠে সাজেকের অপরূপ দৃশ্য দেখা। কুয়াশার চাদরে মোড়ানো পাহাড়কে মনে হবে মেঘের বন্দর। স্টোন গার্ডেন ও আশপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে নিতে পারবেন নাশতার আগেই। ব্যাগ গুছিয়ে নাশতা সেরে জিপে চড়ে খাগড়াছড়ির উদ্দেশে রওনা। খাগড়াছড়ি গিয়ে আলুটিলা, রিসাং ঝর্ণা, জেলা পরিষদ পার্ক, ঝুলন্ত ব্রিজ ঘুরে সন্ধ্যায় নিজেদের মতো করে কেনাকাটা করে নেওয়া। রাত ৮টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে ৯টার বাসে ঢাকায় ফেরা।

বাস : শ্যামলী, ঈগল, শান্তি, নন-এসি ২/২ হিনোবাস—৩৬ সিট।

রিসোর্ট : হিমালয় ইকো রিসোর্ট/টারেং ইকো রিসোর্ট

জিপ : মাহিন্দ্র/টাটা নিউ মডেল সাদা জিপ—১২ আসন।

গ্রুপ ফ্রেশরুম : প্রয়োজনে নেওয়া হবে।

ট্যুর ফি জমা দেওয়ার বিবরণ

ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে জমা দেওয়া যাবে ট্যুর ফি। অ্যাকাউন্ট নম্বর ২৮৯১৪, এ টি এম রেজাউল হক, উত্তরা শাখা।

এ ছাড়া বিকাশের মাধ্যমেও জমা দিতে পারেন ট্যুর ফি।

বিকাশ পার্সোনাল নম্বর : ০১৬৮৩-৮০০৭৮০।

আসন নিশ্চিত করতে ২০২০ টাকা বিকাশ করতে হবে, যা অফেরতযোগ্য। বেদুঈনের অফিসে গিয়েও সরাসরি টাকা জমা দিতে পারেন।

বেদুঈন

সুবাস্তু টাওয়ার, ১৩২ নম্বর শোরুম, দ্বিতীয় তলা, এলিফ্যান্ট রোড।

যোগাযোগ : ০১৩০৭-৪০৩৯৩৩ অথবা ০১৭১৬-২০৭৪০৩

ট্যুরে যা যা বাদ যাবে

ভ্রমণের প্রথম রাতে হাইওয়ে খাবার, যেকোনো ধরনের ব্যক্তিগত খরচ, কোক, চিপস, চানাচুর, সিগারেট। মাদকবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এ ছাড়া পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো বর্জ্য ফেলা যাবে না।

জেনে রাখা ভালো

১. প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন অনুসরণ করা হবে।

২. যেকোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় ট্যুর পরিকল্পনা পরিবর্তন ও পরিমার্জন করার ক্ষমতা প্রতিষ্ঠান রাখে।

৩. খাবার মেন্যুর সময় পরিস্থিতি ও ভেন্যুর ওপর নির্ভর করে পরিবর্তন হতে পারে। যদিও সবকিছু আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে।

৪. সাজেকে বিদ্যুৎ নেই। জেনারেটর ও সোলারের মধ্যমে ফোন ক্যামেরা চার্জ দিতে পারবেন। সঙ্গে পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যেতে পারেন।

৫. সাজেকে রবি, এয়ারটেল ও টেলিটক নেটওয়ার্কের ফ্রিকোয়েন্সি পাবেন। উল্লেখিত অপারেটরের সিম সঙ্গে নেবেন।