সবুজ ছায়ায় ঘেরা বাঘা মসজিদ
গন্তব্য বাঘা মসজিদ। বহু শতাব্দী পুরোনো বাঘা মসজিদ আগে কখনো দেখা হয়নি। আমাদের ভ্রমণ রুটে বাঘা আছে। আর প্রাচীন আমলের বাঘা মসজিদ জেনে রোমাঞ্চিত ছিলাম। কিন্তু বাঘা উপজেলায় বাইক চলতে শুরু করতেই বেশ জ্যাম, অনেক মানুষ, প্রচুর গাড়ি, ধুলোবালি, ঘিঞ্জি পরিবেশ, হাটবাজার আর গরম মিলিয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা দাঁড়িয়েছিল।
বাঘার ব্যস্ততম বাজারের মধ্যে কোনোমতে মানুষের ভিড় ঠেলে বাইক নিয়ে ঢুকলাম। কিন্তু সেখানেও মহাভিড়, লোকে লোকারণ্য। বাজারের মধ্যে একটু উঁচুতে পুরোনো লাল ইটের স্থাপনার কিছু অংশ চোখে পড়ছে। যে স্থাপনার চারপাশে আবার দেয়াল দিয়ে ঘেরা। কিন্তু প্রবেশপথ বা গেট দেখতে না পেয়ে আবারও একজনকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি প্রবেশপথ দেখিয়ে দিলেন।
অপূর্ব, অদ্ভুত আর মোহাচ্ছন্ন কিছুটা সময় কাটিয়েছি। গাছে আচ্ছাদিত মসজিদের চারপাশে, তালগাছের শীতল ছায়া, সবুজ মখমলের মতো মিহি গালিচা, ঝিরঝিরে বাতাস, টলটলে জলের ওজুখানা, লাল ইটের শত শত বছরের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের মেলবন্ধনে গড়া অভিজাত স্থাপনা বাঘা মসজিদ চমৎকার প্রশান্তির জায়গা।
শত শত বছরের পুরোনো ইটে শ্যাওলা জমলেও মজবুত দেয়াল। প্রবেশপথের পরই একদিকে তালগাছের ছায়াঘেরা সবুজের মিহি গালিচা, অন্যপাশে নানারকম গাছের ঘন আচ্ছাদন, যেখানে সব সময় একটা ঝিরঝিরে বাতাস বয়ে চলেছে, প্রার্থনারত সবাইকে সব সময় প্রশান্তি বিলিয়ে যাচ্ছে। দেয়াল পেরিয়ে ও পাশের বাগান পেরিয়ে গেলেই বেশ বড় একটা দিঘি। যেখানে টলটলে জলের সঙ্গে মিহি বাতাস মিলেমিশে প্রশান্তির পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে।
অনেকটা সময় কাটিয়ে আয়েশ করে কলা আর ডাবের পানিতে গলা ভিজিয়ে পথ ধরেছিলাম বাংলাদেশের সবচেয়ে উষ্ণতম উপজেলা নাটোরের লালপুরের উদ্দেশে। দারুণ একটা সুখের স্মৃতি আর ছায়াঘেরা সুন্দর অনুভূতি উপহার দিয়েছিল ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী বহন করে চলা বনেদি বাঘা মসজিদ।