ছুটির দিনে

ঘুরে এলাম নরসিংদী

Looks like you've blocked notifications!

অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম আমরা মেয়েরা মিলে কোথাও ডে ট্যুর দেব। এদিকে ফেসবুকে আবার সরিষাক্ষেত ক্রেজ চলে। সবাই হলুদ রাজ্যে গিয়ে ছবি তুলে পোস্ট দেয়। আমরা কি আর না গিয়ে পারি? 

যেই ভাবা সেই কাজ! আমরা Travelettes of Bangladesh থেকে একটা ইভেন্ট দিয়ে দিলাম নরসিংদীতে।

আমরা উনিশ জন মেয়ে সকাল ৭টার মধ্যে গুলিস্তান বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে গেলাম এবং ৭টা ৪৫-এ নরসিংদীর উদ্দেশে রওনা হলাম। যানজট না থাকায় ৯টা ১৫ মিনিটে পৌঁছে গেলাম নরসিংদী শহরে নতুন বাসস্ট্যান্ডে।

সকালের নাশতা সেরেই পাওয়ার লুম (কাপড় তৈরির কারখানা) দেখতে গেলাম। একদম পাশেই। কারখানার মালিক শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও আমাদের গাইড সরোয়ার ভাইয়ের ছাত্র হওয়ায় আমাদের মেশিন চালু করে দেখালেন। ওখান থেকে চলে গেলাম পাশেই জুতা তৈরির কারখানায়। সোল তৈরি থেকে শুরু করে সেলাই পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মীর কার্যক্রম দেখলাম।


এরপর অটো নিয়ে সোজা গেলাম চান্দেরপাড়া সরিষাক্ষেত দেখতে। যেদিকে তাকাই শুধু হলুদ আর হলুদ। আমরা গান গেয়ে নাচানাচি শুরু করলাম। ম্যানিকুইন চ্যালেঞ্জও করে ফেললাম সরিষাক্ষেতে। মন ভরে ছবিও তোলা হল। কিছুদূর সামনে এগিয়ে দুপুরের খাবার সেরে ফেললাম।

লাঞ্চ সেরে থানার ঘাটে গেলাম অটোতে। মেঘনা নদীতে ভ্রমণ করব আমরা। ওখান থেকে ট্রলার ভাড়া করে ওপাশের গ্রাম করিমপুরের উদ্দেশে রওনা দিলাম। অস্থির একটা জার্নি ছিল। আমরা নৌকা কাম ট্রলারের ছাদে বসে গান গাচ্ছিলাম। স্পিডবোট পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেই মাপের দুলুনি দিয়ে যাচ্ছিল। সব মিলিয়ে অস্থির।

করিমপুর গ্রামটা সুন্দর। সবুজে ভরা। এখানে ঘুরতে ঘুরতে প্রায় সাড়ে ৪টা বেজে গেল। নরসিংদী শহরের পথে ফিরে গেলাম নরসিংদী কলেজ দেখতে।

তখন প্রায় সন্ধ্যা। কিন্তু নরসিংদী এসে কানাইয়ের মিষ্টি না খেয়ে কি যাওয়া যায়! সদলবলে মিষ্টি খেয়ে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ঢাকার পথে রওনা দিলাম।


কীভাবে যাবেন এবং খরচ
গুলিস্তান থেকে নরসিংদীর বাস ছাড়ে, মেঘালয়/বিআরটিসি ১০-১৫ মিনিট পর পরই ছাড়ে। খরচ ৯০ টাকা মেঘালয়ে।

নরসিংদীতে নতুন বাসস্ট্যান্ডেই বাস থামায়। নেমেই সামনের দোকানে নাশতা খেতে পারেন। পরাটা-ডিম-ডালভাজি বা ভাত-ডিম-ডাল খাওয়া যায়।

যদি চান্দেরপাড়া যেতে চান, স্লুইস গেট বললে অটো নিয়ে যাবে। জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া। ওখানেই বাজারে লাঞ্চ সেরে নিতে পারেন। গ্রুপ নিয়ে গেলে একদিন আগে বুকিং দিতে হয়। খাবারের দাম জনপ্রতি ৭০-১০০ টাকা।

খাবার
ভাত-সবজি-মুরগি, চিংড়ি, ডাল অথবা বিরিয়ানি।

মেঘনা নদীতে ভ্রমণ করতে গেলে থানার ঘাটে আসতে হবে। অটো ভাড়া ৩০ টাকা। ট্রলার রিজার্ভ করতে দরদাম করতে হয়। লাগতে পারে ৪৫০-৬০০ টাকা। (যাওয়া-আসাসহ) ৩০ জন অনায়াসে যাওয়া যায়। করিমপুর ঘাটে ও রকম খরচ নেই। হেঁটেই ঘোরা যায়। চা খেতে পারেন ঘাটে।

নরসিংদীর মধ্যে যে কোনো জায়গায় অটো ভাড়া জনপ্রতি ৫-১০ টাকা। কানাইয়ের মিষ্টির মধ্যে ক্ষীরমালাই ৩০ টাকা পার পিস। কালো চমচম ১০ টাকা। সব মিলিয়ে ৫০০-৬০০-এর মধ্যে খুব সহজেই ভ্রমণ করা সম্ভব। আর একদম ব্যাকপ্যাকিং ট্যুরে ৩৫০-৪০০।

তো আর দেরি কেন? ঘুরে আসুন নরসিংদী। আর উয়ারী-বটেশ্বরের খননকাজ শেষ হলে ওখানেও যেতে পারেন। সেই বর্ণনা না হয় আরেকদিন।