ঘোরাঘুরি
৫১ জন মেয়ে মিলে মিনি কক্সবাজারে
ট্রাভেলিং ব্যক্তিগতভাবে আমার কম হয়নি। কিন্তু হালের ক্রেজ মিনি কক্সবাজারে না গেলে আর চলছিল না! তাই Travelettes of Bangladesh-এর দ্বিতীয় ইভেন্ট দিয়ে দিলাম মৈনটঘাটে। প্রথমে ভেবেছিলাম ২০ জন যাব, বাড়তে বাড়তে হয়ে গেল ৫১ জন।
যাত্রা যেভাবে শুরু
সকাল সাড়ে ৮টায় বাসে উঠলাম আমরা। এত মানুষ একসঙ্গে বলে রিজার্ভ বাস-ই ছিল। সোজা চলে গেলাম জিনজিরা আমিরাবাগ নাস্তা হিসেবে ক্ষুদেভাকা খেতে। এত্ত অস্থির খাবার মনে হচ্ছিল অনেকদিন খাইনি, ভাকার সাথে পাঁচ রকমের ভর্তা সঙ্গে সদ্যভাজা ডিম। যেন অমৃত। আমরা মেয়েরা নাস্তা খেয়ে বাসে উঠলাম । এরপর গেলাম রুহিতপুর দিয়ে নবাবগঞ্জ জজবাড়ি। জজবাড়িতে এখন আর ঢুকতে দেয় না। আশপাশে কথা বলে ফোন নম্বর ম্যানেজ করে কল দিলাম জজ সাহেবকে। উনি পারমিশন দিলেন। জজবাড়ি (এক সময়ের ‘ব্রজ নিকেতন’)প্রাচীন একটি বাড়ি। দ্বিতল সুন্দর এ বাড়ির নাম ব্রজ নিকেতন। তবে হালে এ বাড়ি সবাই চিনেন জজবাড়ি নামে। চোখ ধাঁধানো নির্মাণশৈলী দেখে কিছুক্ষণের জন্য হলেও সবাই থমকে দেখবে। ভিতরে আছে বেশ কিছু হরিণ, একটা বড় বাগান, দোলনা, বড়সড় কয়েকটা পুকুর।
ওখান থেকে বের হয়ে জজবাড়ির লাগোয়া পুবে আরেকটি প্রাচীন বাড়িতে গেলাম। বিশাল পুকুরের সামনে সুপারি বাগানের মাঝে দ্বিতল এ বাড়ির নাম ‘নতুন বাড়ি’।
কিছু ছবি তুলে চলে গেলাম আনসার ক্যাম্পে। ইছামতি নদীর পাশে গোল হয়ে সবাই বসে কিছুক্ষণ আড্ডা হলো, পরিচয় পর্ব ও সারা হলো, চা খেলাম। এর পরই উঠে নবাবগঞ্জের-ই এক রেস্টুরেন্টে ইলিশ-ভাত খেয়ে নিলাম। (আগে থেকে অর্ডার দেওয়া ছিল)
পড়ন্ত বিকেল প্রায়। খেয়েই হৈহৈ রৈরৈ করে গেলাম মৈনটঘাটে। ট্রলার রিজার্ভ করে নিলাম। সূর্যটা এই ডুবে প্রায়। আর সেই বাতাস। এত্ত ভা্লো লাগছিল! একটু পরই ফরিদপুরের একটা চরে নামলাম আমরা। হাটু পানি ওখানে।(অনেক চোরাবালি আছে ওখানে। চর থেকে দূরে যাওয়া অনুচিত)
দেখতে দেখতে বিশাল আকারের সূর্যটা টুপ করে ডুব দিল। আর পূর্নিমার চাঁদ উঠল আকাশে। আমরা ফানুস উড়ালাম গুনে গুনে ১০টা। ছবি তোলার দায়িত্বে ছিলাম আমি। তাই দূরে গেলাম একটু। একসঙ্গে এত্তগুলো ফানুস উড়ছে, পিছনে ইয়া বড় চাঁদ, আর চারপাশ সব অন্ধকার। এত অস্থির মোহনীয় ছিল মুহূর্তটা যে কোনোভাবেই লিখে বুঝানো যাবে না।
বেশি দেরি করলাম না। ট্রলারে উঠে গেলাম। আর তারপর তো বাসে ঢাকায় ফেরা।
ব্যাক করার পথ ও গান-নাচ দিয়ে আনন্দপূর্ণ ছিল।
কীভাবে যাবেন এবং খরচ
গুলিস্তান থেকে যমুনা ডিলাক্সে যেতে পারেন। ভাড়া লাগবে ৯০ টাকা। এ ছাড়া, সোয়ারিঘাট থেকে নদী ক্রস করে ওপারে ফেরিঘাট থেকে সিএনজি নিতে পারেন। সিএনজি এক একটা ৪০০-৫০০নেবে। পাঁচজন ধরে।সিএনজিকে বললেই জজবাড়ি নামিয়ে দেবে। ওখান থেকে কাত্তিকপাড়ায় খেতে পারেন লাঞ্চ। অটোভাড়া একেকজনের ১০ টাকা। খাবার ১২০-১৫০ টাকা। ইলিশ নিলে অফ-সিজন বলে ১৮০ টাকা হতে পারে। মৈনটঘাট পর্যন্ত অটো যায়। ভাড়া ২০-৩০ টাকা একেকজনের। ট্রলার প্রতি ঘণ্টায় ৪০০-৬০০ টাকা।
তো আর দেরি কেন? ঘুরে আসুন মিনি কক্সবাজার।