ছুটির দিনে

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত বেকার হোস্টেল

Looks like you've blocked notifications!

কলকাতার তালতলার স্মিথ লেনে অবস্থিত সরকারি বেকার হোস্টেলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভারতবর্ষের রাজনীতির অবিস্মরণীয় সব ইতিহাস বেকার হোস্টেলকে সমৃদ্ধ করেছে। সেই বেকার হোস্টেলকে আরো বেশি স্মরণীয় বরণীয় করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই বেকার হোস্টেলে থাকতেন বঙ্গবন্ধু। তো চলুন না সময় করে ঘুরে আসি কলকাতার ইতিহাস সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বেকার হোস্টেলে।

বেকার হোস্টেলের অবস্থান

কলকাতা শহরের যে কোনো প্রান্ত হতে যেতে হবে নিউমার্কেট এলাকায়। সেখান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে তালতলায় স্মিথ লেনে যেতে হবে। স্মিথ লেন থেকে কিছু দূরে এগিয়ে গেলে হাতের ডানে বেকার হোস্টেলের অবস্থান।

যা দেখবেন

সবুজ রঙের লোহার গেট পার হলেই ভেতরে বেশ পুরোনো স্থাপনা। তিনতলা দালান, লম্বা লম্বা জানালা দরজা। কাঠের সিঁড়ি পেরিয়ে যেতে হবে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ২৩ ও ২৪ নম্বর রুমে। তৃতীয় তলায় কক্ষে প্রবেশের পর দেখবেন বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কারাজীবন পাথরে খোদাই করে লিপিবদ্ধ করা। দেখা পাবেন চোখে চশমা, মুজিব কোট পরিহিত শ্বেতপাথরে নির্মিত বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বরের সঙ্গে ২৩ নম্বর কক্ষটিকে যুক্ত করে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষ গড়ার উদ্যোগ নেন। পরে ওই বছরের ৩১ জুলাই বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকক্ষের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সত্যসাধন চক্রবর্তী। এর পাশের  ২৪ নম্বর কক্ষে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর পড়ার চেয়ার-টেবিল, একটি কাঠের আলমারি ও খাট। বঙ্গবন্ধুর একটি আলোকচিত্র আর বেশ কিছু বইপুস্তক।

ঢাকা থেকে কীভাবে যাবেন

ইন্ডিয়ান হাইকমিশন, ঢাকার ওয়েবসাইডে ভিসার ই-টোকেন ফরম পাওয়া যায়। যেখানে কোন পথে আপনি যাবেন তার একটি অপশন রয়েছে।

বেকার হোস্টেল যেতে হলে যে কোনো পথে যেতে পারবেন। তবে ভারতীয় ভিসায় এখন যেকোনো দুটি পথের অনুমোদন নিতে পারেন। রেলপথ সঙ্গে আকাশপথ। নতুবা সড়কপথের সঙ্গে আকাশপথ। এখানে আপনি রেলপথে  গিয়ে আকাশ পথে ফিরতে পারেন। অথবা আকাশপথে গেলেন, সড়কপথে ফিরতে পারেন।

রেলপথ

এসি, নন এসি কিংবা তিনজনের একটি কেবিন খুব বেশি ভাড়া নয়। ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য আপনাকে ভিসা সংযুক্ত পাসপোর্ট নিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে যেতে হবে। সেখানে একটি আলাদা বুথ রয়েছে। নির্দিষ্ট একটি ফরম পূরণ করে পাসপোর্টসহ কাউন্টারে জমা দিতে হবে। আপনার তারিখ মোতাবেক আসন থাকলে সহজেই টিকেট পেয়ে যাবেন। অবশ্য তার জন্য অন্তত সপ্তাহখানেক আগে যাওয়া ভালো।

ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সকাল ৮টা ১০ মিনিটে কলকাতার চিতপুর স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টার এই যাত্রাকালে সব রকমের গরম খাবার রেল ক্যান্টিনেই পাওয়া যায়। চিতপুর স্টেশন থেকে জাকারিয়া স্ট্রিট খুব বেশি দূরে নয়। সঙ্গে তেমন কোনো ভারী মালামাল যদি না থাকে তবে বাস কিংবা মেট্রোরেলে যাওয়া যায়।

তবে কলকাতায় প্রথম ভ্রমণ হলে ট্যাক্সি নিয়ে নেওয়া ভালো। ট্যাক্সিতে মিটারে যেতে পারেন কিংবা চুক্তিতে যেতে পারেন। তবে ১৫০ রুপি থেকে ২০০ রুপি নেবে, যেভাবেই যান। যেখানে বাসে বা মেট্রোরেলে মাত্র আট-দশ রুপিতে সম্ভব। এখানে বলে রাখা ভালো, বাসে বা মেট্রোরেলে গেলে বেশকিছু পথ হেঁটে যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে।

কোথায় থাকবেন

কলকাতায় আপনি যে পথেই আসেন না কেন, শহরে অনেক ভালো হোটেল রয়েছে। আপনি সহজেই ৫০০ থেকে এক হাজার ৫০০ রুপির মধ্যে ভালো হোটেল পেয়ে যাবেন। তবে এর চেয়ে বেশি দামের হোটেলও রয়েছে এখানে। কয়েকটি হোটেলের নাম ও ঠিকানা :

হোটেল মণীষ, ঠিকানা : পি – ১, ডবসন লেন, দীঘা বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে, ফোন নং : ০৩৩ – ২৬৬৬৬৩১৯, ২৬৬৬৬৩২০

সর্বাধিক রুম ভাড়া ১৫০০ রুপি , সর্বনিম্ন রুম ভাড়া ৫০০ রুপি।

দ্য নিউ অশোকা হোটেল, ঠিকানা : ১৯/১/১/৪, সত্যনারায়ণ মন্দিরের পাশে, মুখরাম কানোরিয়া রোড, ফোন নং : ০৩৩–২৬৬৬৪২০৯

সর্বাধিক রুম ভাড়া : ১২০০ রুপি, সর্বনিম্ন রুম ভাড়া ৫০০ রুপি (আইএনআর)।

এভি হোটেলস প্রাইভেট লিমিটেড, ঠিকানা : ১, বড় বাজার পুলিশ স্টেশনসংলগ্ন, শম্ভু মল্লিক লেন, বড় বাজার, ফোন : ০৩৩– ২২৬৮৭৭৪১/৪৬/৪৮/৪৯

সর্বাধিক রুম ভাড়া ১২০০ রুপি, সর্বনিম্ন রুম ভাড়া ৫০০ রুপি।

ক্যাপিট্যাল গেস্ট হাউস, ঠিকানা : ১১ –বি, চৌরঙ্গী লেন, কলকাতা, দূরাভাস (ফোন) : ০৩৩ – ২২৫২৫২২৫, ২২৫২০৫৯৮

সর্বাধিক রুম ভাড়া ১২০০ রুপি,  সর্বনিম্ন রুম ভাড়া ৫০০ রুপি।