ঘোরাঘুরি

পৌষ সংক্রান্তির মেলায়

Looks like you've blocked notifications!

বাঙালির সংস্কৃতিতে বারো মাসে তের  পার্বণের একটি পার্বণ হলো পৌষ সংক্রান্তি। পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বাঙালির সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন।বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিন বাঙালিরা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে।

তার মধ্যে পিঠা খাওয়া, ঘুড়ি উড়ানো, মাছেরমেলা অন্যতম। ভারতের বীরভূমেরকেন্দুলী গ্রামে এই দিনটিকে ঘিরে ঐতিহ্যময় জয়দেব মেলা হয়। বাউল গান এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। মূলত জ্যোতিষশাস্ত্রের একটি ক্ষণ। 'মকরসংক্রান্তি' শব্দটি য়েনিজ কক্ষপথ থেকে সূর্যের মকর রাশিতে প্রবেশকে বোঝানো হয়ে থাকে। ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী 'সংক্রান্তি' একটি সংস্কৃত শব্দ, এর দ্বারা সূর্যের এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে প্রবেশ করাকে বোঝানো হয়ে থাকে। ১২টি রাশি অনুযায়ী এরকম সর্বমোট ১২টি সংক্রান্তি রয়েছে। মূলত অগ্রহায়ণের ধান কাটার পর থেকে শুরু নবান্ন উৎসব। প্রতি পৌষ সংক্রান্তিতে মৌলভীবাজারের শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর তীরে প্রায় ২০০ বছর আগে থেকে চলে আসছে মাছের মেলা । আপনিও চাইলে মাত্র ৬০০ টাকা খরচ করে ঘুরে আসতে পারেন এই মেলায়।

যা দেখবেন

হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত জনপথ। চারপাশের ডালায় সাজানো অগণিত নানা জাতের মাছ শীতের মিঠেকড়া রোদে চকচক করছে। এখানে শুধু মাছ কিনতে সবাই আসেনি। অনেকে এসেছে মাছ দেখতেও। মেলায় দেখতে পাবেন এক দল লোক গান গাইছে। আশপাশের লোকজন গভীর আগ্রহ নিয়ে তাদের গান শুনছে। কিছুদূর গেলে পরে দেখা পেতে পারেন জামাই-বউ পান, চিড়া, মুড়ি, খই, সিরাজ ভাইয়ের আচারের দোকান।

মূল মেলায় প্রবেশ আর পর দেখতে পাবেন রুই, কাতলা, চিতল, বোয়াল, আইড়, বাঘাইড়, বরফ দেওয়া ইলিশ , আরো নাম না জানা মাছ। তবে কীভাবে মেলা শুরু হয়েছিল তার সঠিক ইতিহাস জানে না কেউ। আগে এই মাছের মেলায় স্থানীয় বিভিন্ন হাওর-বাওরের, নদ-নদীর মাছ নিয়ে আসত জেলেরা। আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীদের বিরাট বিরাট

চালান। সিলেটের কুশিয়ারা নদী, সুরমা নদী, মনু নদী, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, কাওয়াদীঘি হাওর, হাইল হাওরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা বাঘ, রুই, কাতলা, বোয়াল, গজার, আইড়সহ বিশাল বিশাল মাছ নিয়ে আসেন। মাছের মেলায় পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের কমে চাহিদার মাছ কেনা যায় না। কারণ মাছের মেলা বলে কথা। বড় ব্যবসায়ীরা সপ্তাহখানেক আগে থেকে বড় বড় মাছ সংগ্রহ করতে থাকেন। সেই অনুযায়ী মাছের দাম ও হাঁকা হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে আড়ত থেকে ছোট বড় অনেক জাতের মাছ নিয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েন।

যেভাবে যেতে হবে :

 ঢাকা /সিলেট থেকে মৌলভীবাজার যাওয়া যায় বাসে করে অথবা ট্রেনে করে। ভাড়া নিবে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা । বাসে গেলে সরাসরি নামতে পারবেন শেরপুরে অথবা ট্রেনে গেলে মৌলভীবাজার থেকে বেবি টেক্সি কিংবা মাইক্রোবাসে করে যেতে হবে শেরপুর।