ছুটির দিনে
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমে একদিন
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/06/04/photo-1528120239.jpg)
সোনারগাঁ উপজেলার বারদী বাজারের পশ্চিম-উত্তর কোণে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম অবস্থিত । বারদীর লোকনাথ আশ্রম এখন শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ স্থানই নয়, বরং ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে সব ধর্মের, সব মানুষের কাছে এক মিলন মেলায় রূপ নিয়েছে। নাগরিক ব্যস্ততায় যখন ক্লান্ত দেহ-মন তখন ঘুরে আসতে পারেন “বারদী”, শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম থেকে। আর খরচের কথা ভাবছেন মাত্র ২০০ টাকা।
প্রতি বছর উনিশ জ্যৈষ্ঠ এখানে সপ্তাহব্যাপী মেলা বসে। ১২৯৭ সালের এই দিনে পরম পুরুষ শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী মৃত্যুবরণ করেন। তার এই মহাকাল প্রয়াণের দিনটিকে ভক্তি শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে স্মরণ করার জন্যই এই মেলার আয়োজন হয়। আশ্রমের ঠিক সামনে বিশাল সবুজ মাঠ। এখানেই মেলা বসে। এই মেলাকে কেন্দ্র করে বিশাল আয়োজন করা হয় এখানে। নানান এলাকা থেকে হাজারও পণ্য আসে। আসে বাহারী তৈজসপত্র, আহারের ফল ফলাদি আরো কত কী। বহুদেশে বহু ধর্মাবলম্বী মানুষের আগমন ঘটে এই মেলায়। এ এক বিশাল আয়োজন। এক সপ্তাহব্যপী চলতে থাকে রাতদিন।
এই তিরোধান উৎসবে অংশগ্রহণ করতে প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কাসহ দেশের লক্ষাধিক লোকনাথ ভক্ত বারদী আশ্রমে এসে সমবেত হন । জ্যৈষ্ঠের উনিশ তারিখ আশ্রমের চৌচালা ছাদের ওপর থেকে ভক্তদের ছুঁড়ে দেওয়া বাতাসা মিষ্টান্ন ও তা কুড়ানোর উচ্ছ্বল আয়োজন হয় যা “হরি লুট” নামে পরিচিত। এ ছাড়া দিনব্যাপী চলে গীতা পাঠ, বাল্যভোগ, লোকনাথের জীবন বৃত্তান্ত পাঠ, রাজভোগ, প্রসাদ বিতরণ ও আরতী কীর্তনসহ ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান।
শ্রী শ্রী বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমের দক্ষিণের উঠানে তাঁর সমাধিস্থলের পশ্চিমে শত বৎসর ধরে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির একটি বকুলগাছ। আশ্রমের ভেতরে আছে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর বিশাল তৈলচিত্র । মূল আশ্রমের পেছনে খোলা উঠান পেরিয়ে বিশাল পাঁচতলা ভবনের যাত্রীনিবাস । পশ্চিমে আরো দুটি বিশালাকার যাত্রীনিবাস । ভক্ত ও দর্শণার্থীরা বিনা পয়সায় এখানে রাত্রিযাপন করেন। সাধক পুরুষ লোকনাথ ব্রহ্মচারী জীবিত থাকা অবস্থায় আশ্রমের পাশে কামনা সাগর ও জিয়স নামে পুকুর খনন করা হয়। এই পুকুরটিতে আশ্রমে আগত ভক্তরা স্নান করেন।
যেভাবে যাবেন
গুলিস্তানের মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের গেট থেকে বোরাক এসি, নন এসি বাস ভাড়া ৫৫-৪৫ টাকা মুগড়াপাড়া পর্যন্ত। ৪০ মিনিটের পথ। লোকাল অটোরিকশা নিয়ে বাঘারপাড়া পর্যন্ত ২০ মিনিটের পথ। অটোরিকশা ভাড়া ১৫০ টাকার মতো। আশ্রমে যেতে চাইলে বারদী বাজার পর্যন্ত রিকশা ভাড়া ২০ টাকা। সেখান থেকেই অটোরিকশা পাবেন মুগড়াপাড়া পর্যন্ত। ২০০ টাকার মতো নেবে। খাওয়ার জন্য খুব ভালো মানের রেস্টুরেন্ট নেই, তবে খাবার খেতে খারাপ লাগবে না।